মৃতপ্রায় সরস্বতী নদীকে বাঁচাতে বাঁধের পরিকল্পনা

নদ-নদীর দেশ ভারত। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের মতো বড়ো নদী তো রয়েছেই। তার সঙ্গে রয়েছে বহু ছোটো নদী। উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে যাদের অনেকেই আজ সংকটের মধ্যে রয়েছে। তেমনই এক নদী হিমাচল প্রদেশের ঘাগর। অনেকের মতে এটাই পুরাণে উল্লিখিত সরস্বতী নদী (Saraswati River)। মৃতপ্রায় সরস্বতী নদীকে বাঁচাতে এবার তার উপর বাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনা নিল হিমাচল প্রদেশ সরকার। কেন্দ্রের সঙ্গে এই বিষয়ে সমঝোতাপত্র বা মউ স্বাক্ষরও হয়ে গিয়েছে। হিমাচলের (Himachal Pradesh) আদি বদ্রী অঞ্চলেই ৭৭ একর জমি নিয়ে তৈরি হবে এই বাঁধ।

শুক্রবার হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর জানিয়েছেন এই বাঁধ তৈরির পরিকল্পনার কথা। তাঁর মতে, সরস্বতী নদীকে বাঁচানো এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। তবে পাশাপাশি রাজ্যে জলসংকট মোকাবিলাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্প। পরিকল্পনা অনুযায়ী এই বাঁধ তৈরি হলে প্রতি বছর সেখান থেকে অন্তত ৩৯ মিলিয়ন লিটার পানীয় জলের জোগান সম্ভব হবে। আর কৃষিক্ষেত্রে ও অন্যান্য কাজের জন্য পাওয়া যাবে ৫৭৯ হেক্টর জল। অসংখ্য ছোটো-বড়ো নদী, বিশেষত গঙ্গার উপস্থিতির জন্য এতদিন রাজ্যে জলসংকটের কথা ভাবাই যেত না। কিন্তু সম্প্রতি দূষণ যেভাবে বাড়ছে, তাতে নিরাপদ জলের সত্যিই সংকট দেখা দিয়েছে। আর এই সমস্যার মোকাবিলা করতে পারে প্রস্তাবিত এই প্রকল্প।

২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হতে চলেছে এই বাঁধ। রাজ্য এবং কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে এগোবে প্রকল্প। তবে শুধুই বাঁধ তৈরি নয়, পাশাপাশি সেই বাঁধকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন জয়রাম। এক্ষেত্রে রাজ্য এবং কেন্দ্র স্বাধীনভাবেই পরিকল্পনা নেবে। এবং একে অন্যের উদ্যোগে অথবা এই বাঁধ প্রকল্পে বাধা সৃষ্টি না করলে কেউই অন্যের পরিকল্পনার বিষয়ে কোনো মতামত রাখবে না। এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে দুই পক্ষের আলোচনায়। একদিকে হিমাচলপ্রদেশের নদনদীর ঐতিহ্য রক্ষা, অন্যদিকে জলসংকট মোকাবিলা – এই দুই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এই প্রকল্প বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাছাড়া হিমাচল প্রদেশের পর্যটন শিল্পে কোভিড পরবর্তী সময়ে নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে আনার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে এই প্রকল্প।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কাছিম সংরক্ষণে জিপিএস ট্র্যাকিং, অভিনব উদ্যোগ হুগলি নদীতে