পরিবেশের কারণে উদ্বাস্তু, শিকড় ছিঁড়ছে আলাস্কার অধিবাসীদের

যাযাবরদের গল্প আমরা অনেকেই শুনেছি। মূলত জীবিকার জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হত তারা। এখনও হয়। কিন্তু এবার যোগ হয়েছে আরও একটা কারণ। পরিবেশের ভাঙন। হ্যাঁ, ঠিক শুনছেন। পরিবেশের বিপর্যয়ের জন্য মানুষ নিজের বাড়ি-ঘর, চেনা প্রকৃতি ছেড়ে দিতে একপ্রকার বাধ্যই হচ্ছে। সম্প্রতি যার আঁচ পড়ল আলাস্কায়। নিউটক, ইউপলিক-সহ বেশ কিছু গ্রাম ফাঁকা করে বাসিন্দারা চলে যাচ্ছেন অন্য জায়গায়। কিন্তু কেন?

পরিবেশ দূষণ যে এই মুহূর্তে পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, সেটা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্রমবর্ধমান দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পৃথিবীর নানা অঞ্চল। যার মধ্যে অন্যতম আলাস্কা। অন্যতম শীতল এই অঞ্চলটিও ভয়ানকভাবে ক্ষতির শিকার। বরফ তো গলছেই, সেই সঙ্গে কেটে ফেলা হচ্ছে যাবতীয় গাছগাছালি। আধুনিকতা ও উন্নয়নের ঢেউয়ে সেখানে ঘাঁটি গেড়েছে তেল উত্তোলনকারী সংস্থা। যত উন্মুক্ত হচ্ছে মাটি, ততই আলাস্কার মতো বরফে ঢাকা জায়গাগুলি নজরে পড়ছে পুঁজিপতিদের। কিন্তু এর ফলে সেখানে আমূল বদলে যাচ্ছে পরিবেশ। জলস্তর বেড়ে যাচ্ছে। নদীর পাড়গুলিতে ইতিমধ্যেই ভাঙন ধরেছে। যার জন্য বিপদে পড়েছে এইসব নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো।

নিউটক, ইউপলিকের মতো গ্রামগুলি এই ভাঙনের কবলে পড়েছে। বেশ কিছু বাড়িও তলিয়ে গেছে জলের তলায়। ভবিষ্যতে বন্যার আশঙ্কাও একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থায় গ্রাম ছাড়ার ভাবনাই নিয়েছেন বাসিন্দারা। আরও ভেতরে আলাদা জায়গা তৈরি করে বসবাস করছেন তাঁরা। অসহায় বোধ করছেন, কিন্তু তাঁদের আর কিচ্ছু করার নেই। অথচ পরিবেশের উপর এই অত্যাচার বন্ধ হচ্ছে না। হাজার আন্দোলনেও নির্বিকার পুঁজিবাদীরা। আওয়াজের তেজ বাড়ছে, কিন্তু সমাধান কবে হবে! উত্তরের অপেক্ষায় এই ‘ক্লাইমেট রিফিউজি’রাও।