আবারও মৃত্যুর থাবা, চলে গেলেন কিংবদন্তি ফুটবলার চুণী গোস্বামী

একের পর এক নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন চুণী গোস্বামী। বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই কিংবদন্তি ফুটবলার। অবশেষে মৃত্যু এসে কেড়ে নিল প্রাণ। আজ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হলেন তিনি। মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে হৃদরোগকে।

আরও পড়ুন
ফিরিয়ে দিয়েছেন ব্রিটিশ ক্লাবের ডাক, ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেটেও তুখোড় ছিলেন চুণী

ভারতীয় ক্রীড়া জগতে পরিচিত ছিলেন ‘চুণী’ নামেই। ডাকনামের আড়ালে আসল নামটি প্রায় অনুচ্চারিতই থেকে গেছে। ‘সুবিমল গোস্বামী’ নামটি সার্টিফিকেটেই রয়ে গেছে। তাতে ক্ষতি বিশেষ কিছু হয়নি। তিনি যে ভারতের চুণী! রত্নই বটে। ১৯৩৮ সালে অবিভক্ত বাংলার কিশোরগঞ্জে জন্মেছিলেন চুণী গোস্বামী। সেখান থেকেই কলকাতায় আসা, তারপর যাত্রা শুরু।

সারাটা জীবন খেলে গেছেন মোহনবাগানে। ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৮-এর অবসর পর্যন্ত টানা খেলে গেছেন সেখানে। জুনিয়র স্তর থেকে সিনিয়র, তারপর কিংবদন্তি— এই দীর্ঘ যাত্রার পেছনে ছিল অসম্ভব পরিশ্রম, অদম্য নিষ্ঠা আর খেলার প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। মোহনবাগান তো বটেই, ভারতের হয়েও তাঁর পরিসংখ্যান প্রমাণ করে কেন তাঁকে সর্বকালের অন্যতম সেরা বলা হয়। ১৯৫৬ সালে চিনের অলিম্পিক দলকে ১-০ গোলে হারায় ভারত। চুণী গোস্বামীর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল সেটা। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। অলিম্পিক, এশিয়ান গেমস, এশিয়া কাপ-সহ একের পর এক জায়গায় দাপিয়ে খেলে গেছেন তিনি। একসময় দেশের অধিনায়কও হন। ১৯৬২ সালের সেই এশিয়ান গেমস, যেখানে ভারত সোনা জেতে; ওই টুর্নামেন্টে অধিনায়ক ছিলেন চুণী। তারপর ১৯৬৪-তেও রুপোর পদক জেতেন এশিয়া কাপে।

বেশ কয়েকদিন আগেই মারা গেলেন চুণী গোস্বামীর সতীর্থ, আরেক কিংবদন্তি কোচ-ফুটবলার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়। দুজনে মিলে কত রূপকথা তৈরি করেছিলেন ভারতীয় ও বাংলা ফুটবলে। চুণী-পিকে সেই অবিস্মরণীয় জুটি! শুধু ফুটবলই নয়, চুণী গোস্বামী চুটিয়ে ক্রিকেটও খেলেছিলেন। বাংলার হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটও খেলেছেন। গতকাল থেকে একের পর এক মৃত্যুর আবহে যাচ্ছে গোটা ভারত। ইরফান খান, আজ ঋষি কাপুর; শেষে চুণী গোস্বামী। করোনার এই ভয়াবহ আবহে এই মানুষদের চলে যাওয়া আরও ব্যথিত করে আমাদের। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন চুণী গোস্বামী!