ছিঁড়ে গেল জুরাসিক যুগের আরেকটি সূত্র, মানুষের অত্যাচারে বিলুপ্ত চাইনিজ প্যাডেলফিশ

চাইনিজ প্যাডেলফিশের বিলুপ্তির ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত গবেষকরা। গত শতকের শেষ দিকে থেকেই প্যাডেলফিশের দেখা আর পাওয়া যায় না। ২০০৩ সালে একটি গবেষণা দল ইয়াংটি নদীতে মাত্র একটি প্যাডেলফিশের সন্ধান পেয়েছিল। তারপর আর এই প্রজাতির কোনো মাছ দেখা যায়নি। ২০০৯ সালে আইইউসিএন'এর রেড লিস্টে এটিকে বিশেষভাবে বিপন্ন বলে উল্লেখ করা হলেও বর্তমানে এর বিলুপ্তি সম্বন্ধে বিজ্ঞানীরা প্রায় নিশ্চিত।

প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর আগে জুরাসিক যুগে জন্ম নিয়েছিল এই প্যাডলফিশ বর্গের মাছগুলি। তারমধ্যে মাত্র দুটি প্রজাতির জীবিত অস্তিত্বের কথা জানতেন বিজ্ঞানীরা। একটি আমেরিকান প্যাডেলফিশ, অন্যটি চাইনিজ প্যাডেলফিশ। এই বিরল প্রজাতির মাছটির বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে প্রকৃতির অপূরণীয় ক্ষতি বলেই দাবি করছেন বিজ্ঞানী কিউই ওয়ে।

একসময় চিনের পূর্বদিকের অনেক নদীতেই মাছটির বাসা ছিল। তবে ১৯৫০এর পর ইয়াংটি ছাড়া অন্য কোথাও দেখা যেত না চাইনিজ প্যাডেলফিশ। ফসল বাঁচাতে গ্রামবাসীরা মেরে ফেলতেন অনেক মাছ। ভেঙে ফেলা হত নদীর পাড়ে মাছেদের ডিম পাড়ার জায়গা। এর মধ্যে ১৯৭০ সালে গাজুবা বাঁধ নির্মাণ করা হলে অন্যান্য অনেক মাছের মতোই বিপন্ন হয়ে পড়ে চাইনিজ প্যাডেলফিশ। ১৯৮৯ সালে সরকারি তরফে সংরক্ষণ প্রক্রিয়া চালু করা হলেও বাঁচানো গেল না বিরল এই প্রজাতিটিকে।

মানুষের একচেটিয়া অধিকারের সামনে পড়ে প্রকৃতির বুকের থেকে হারিয়ে গেছে বহু জীব। সেই তালিকাতেই নতুন সংযোজন চাইনিজ প্যাডেলফিশ। কিন্তু এইসমস্ত জীবদের বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে মানুষের অস্তিত্ব টিকবে তো?