ছোটোবেলার বন্ধুরা একজোট হয়ে দুঃস্থদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার

করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় সকলকে গৃহবন্দি থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। কিন্তু তাতে ভেঙে পড়েছে দেশের আর্থিক অবস্থা। কাজ হারিয়েছেন অনেকেই। বিশেষত প্রান্তিক খেটে খাওয়া মানুষেরা। চরম অনটনের মধ্যেই দিন কাটছে তাঁদের। দৈনন্দিনের খাবার জোগান করতেই কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিদিন। তাঁদের এই কষ্টের দিনে পাশা থাকতে অনন্য উদ্যোগ নিল বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন ছাত্ররা।

বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনের ২০০৮-০৯ সালের মাধ্যমিক ব্যাচের প্রাক্তনীরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তাঁরা এই কর্মসূচির নামকরণ করেছেন ‘প্রত্যয়’। বরানগরের নিয়োগী পাড়া, নোয়াপাড়া, তাঁতি পাড়া, রতনবাবু রোড এই অঞ্চলগুলিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এই কর্মসূচি। গত সপ্তাহে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় চাল, ডাল, আটা, তেল, নুন ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রী। সাহায্য পেয়েছেন প্রায় ১০০টি প্রান্তিক পরিবার। আজও একাধিক এলাকায় পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্যদ্রব্য।

এ-সম্পর্কে এক প্রাক্তনী, অনঙ্গজ্যোতি সেন প্রহরকে জানালেন – ‘সেইসব নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার, যারা চক্ষু লজ্জার খাতিরে সরকারী বেসরকারী ত্রাণের লাইনে দাঁড়াতে পারেন না, তাঁদের কাছেই পৌঁছতে চেয়েছিলাম আমরা। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ১০০ পরিবারের হলেও, বন্ধুদের পাশাপাশি অগণিত মানুষের ভালোবাসায় ও সমর্থনে আজ আমরা সেই লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ করতে পেরেছি। ছোটোবেলায় যাদের সঙ্গে টিফিন ভাগ করে খেয়েছি, আজ তাদের হাতে হাত রেখে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি আমরা।’

তবে এখানেই শেষ নয়। প্রাথমিক পর্যায়ের পরে নতুন উদ্যোম নিয়েই কাজ শুরু করেছে ‘প্রত্যয়’। তাঁদের লক্ষ্য, পরবর্তী সপ্তাহগুলিতেও যেন সাহায্য পৌঁছে দেওয়া যায় মানুষগুলির কাছে। তাঁদের লক্ষ্য, যেন অভুক্ত না থাকে কেউই। সেই মতো চলছে প্রস্তুতিও। সঙ্গে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন অনেকেই। এই মহামারীর সময়ে প্রান্তিক মানুষগুলিকে মানবিকতার ‘প্রত্যয়’ জোগাচ্ছে এই উদ্যোগ।