বেতন নেই প্রায় এক বছর, অফিসেই আত্মহত্যা বিএসএনএল কর্মীর

এদেশে জীবিকার টানাপোড়েনে সাধারণ মানুষের আত্মহত্যার খবর নতুন নয়। তা সে কৃষকের আত্মহত্যাই হোক, বা কর্পোরেট চাকুরিজীবীর। সম্প্রতি, সেই তালিকায় যোগ হলেন আরও একজন। ১০ মাস বেতন না পেয়ে শেষমেশ আত্মহত্যা করলেন কেরালার নিলাম্বুর জেলার রামকৃষ্ণণ।

বিএসএনএল কম্পানিটির অর্থনৈতিক অবস্থা সাম্প্রতিক কালে বেশ চাপের মুখে। তার ওপর রয়েছে রিলায়েন্স জিও, ভোডাফোন ও অনান্য টেলিকম কোম্পানিগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা। গত বৃহষ্পতিবার ৫২ বছর বয়সি এই ব্যক্তি অফিসেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

শ্রমিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, ১০ মাস ধরে কোনো বেতন পাননি এই ব্যক্তি। সংসার চালানো কার্যত কঠিন হয়ে পড়েছিল তাঁর। সেই চাপেই তিনি আর বেঁচে থাকার কোনো অর্থ খুঁজে পাননি। ৩০ বছরের পুরনো কর্মী রামকৃষ্ণণ তৎকালীন টেলিকম অথরিটি অফ ইন্ডিয়াতে সাফাই কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করেন। এরপর বিএসএনএলে ঠিকা কর্মী হিসেবে তিনি নিযুক্ত হন।

বিএসএনএল ভারতীয় বাজারে মন্দার মুখ দেখতেই বহু কর্মীকে ছাটাই করতে শুরু করে। নিচু পদে আসীন বহু ব্যক্তির মেলেনি বেতনও। দুজন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বেঁচে থাকা তাই কঠিন হয়ে পড়েছিল রামকৃষ্ণণের জীবনে। এর আগে বিএসএনএল দশ মাস ধরে কোনো কর্মীকে বেতন না দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে এ-বছরের শুরু থেকেই নানা রকম অসুবিধের মুখে পড়েছেন কোম্পানিটির চাকুরিজীবীরা। তার ওপর মাথার ওপর ঝুলছে চাকরি হারানোর ভয়। সঠিক বেতন না পেয়ে কোনওরকমে দিন গুজরান করছেন অনেকেই। কিন্তু একজন কর্মীর আত্মহত্যা এই কোম্পানির খারাপ অবস্থাকে খুব কাছ থেকে চিনিয়ে দিয়ে যায়।

সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। আগামী দিনগুলোয় আরও মানুষের চাকরি যাবে, তা নিশ্চিত করেছেন অনেকেই। ভবিষ্যৎ কোনদিকে এগোচ্ছে, এই পরিস্থিতির আদৌ উন্নতি হবে কিনা, সেটাই এখন দেখতে চাইছেন সাধারণ মানুষ থেকে পর্যবেক্ষক – সকলেই।