লেমনেডের দোকান চালিয়েই ডাইপার বিতরণ, একক মায়েদের পাশে এগারো বছরের খুদে

কার্টিয়ার ক্যারি। বয়স মাত্র ১১ বছর। ভার্জিনিয়ার হ্যাম্পটনের এই কিশোর কোনো বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব নয়। তবে এই খুদেই এখন ভার্জিনিয়া কমিউনিটির সুপারহিরো। এই খুদেই এখন শেখাচ্ছে ভালো কাজে ঝাঁপানোর জন্য বয়স হয় না কোনো।

লকডাউনে অর্থনীতি যে ভেঙে পড়েছে তা আর নতুন কি? কিন্তু এই পরিস্থিতির মুখে বিপর্যস্ত একক মায়েরা। সদ্যজাত সন্তানদের পালন করাই এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ তাঁদের সামনে। কারণ বন্ধ হয়েছে উপার্জনের পথ। এইসকল একক মায়েদের পাশেই দাঁড়িয়েছে বছর এগারোর কিশোর ক্যারি। জুগিয়ে যাচ্ছে ডাইপার এবং ওয়াইপ।

লকডাউনে বাড়ি থেকে খানিক দূরে ঠাকুমার বাড়িতে গিয়েছিল ক্যারি। সেখানেই তার চোখে পড়ে একক মায়েদের দুর্দশার বাস্তব ছবি। অধিকাংশই তাঁরা সামান্য জীবিকা নির্বাহের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই লকডাউনেও। বাস্তবের এই খণ্ডচিত্র দেখেই নিজের লক্ষ্য ঠিক করে নেয় ছোট্ট ক্যারি। কিন্তু সাহায্যের জন্যও যে অর্থ লাগবে বিপুল পরিমাণ। তা আসবে কোথা থেকে?

যে বয়সে ছোটোরা লেমনেডের জন্য বায়না করে বাবা-মায়ের থেকে; সেই বয়সেই ক্যারি নিজের উদ্যোগে খুলে ফেলে একটি লেমনেডের দোকান। সঞ্চয় তো নয়ই, নিজের প্রতি এক নয়া পয়সাও খরচ নয়, সেই সম্পূর্ণ লাভটাকেই কাজে লাগায় সে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদই সংগ্রহে আসে ৫ হাজার মার্কিন ডলার। তা দিয়ে ৬৫০০ ডাইপার কিনে তা ভার্জিনিয়া অঞ্চলে বিতরণ করে ক্যারি। তাঁর উদ্যোগে সাহায্যে জন্য এগিয়েও আসেন অনেকে। এখনও অবধি ২২ হাজার ডাইপার দিয়ে একক মায়েদের সাহায্য করেছে এই ছোট্ট কিশোর।

তবে তার লক্ষ্য সব মিলিয়ে ২৫ হাজার ডাইপার বিতরণ করা। তবে এখানেই শেষ নয়। শীতের যে আর বেশি বাকি নেই, ফলে সেই চিন্তাও ভাবিয়ে তুলেছে ক্যারিকে। আগে থেকেই গৃহহীনদের জন্য পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছে সে। শীতকাল পড়লেই সে বিতরণ শুরু করবে ‘কার্টি প্যাক’-এর। যার মধ্যে থাকবে ডিওড্রান্ট, সাবান, টিস্যু এবং হ্যান্ড ওয়ার্মার। এই লক্ষ্যপূরণের জন্যই এখন রাতদিন এক করে ক্যারি মননিবেশ করেছে তার ছোট্ট লেমোনেডের দোকানে। 

গত বছরই ক্যারি ‘কিডস ৪ চেঞ্জ ৭৫৭’ নামের একটি অলাভজনক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই সংস্থা নিজের মতোই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দিব্যি। পাশাপাশি নিজের একার উদ্যোগেই এই বিপুল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে সে। তার এই সাহায্য পেয়ে উচ্ছ্বসিত ভার্জিনিয়ার একক মায়েরা। ক্যারি জানায়, এক মহিলা তার সাহায্য পেয়ে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। এর থেকে বড় প্রাপ্তি কিছু হতে পারে না বলেই বিশ্বাস তার। এই ছোট্ট সুপারহিরো নতুন করেই যেন শেখাচ্ছে সহযোগিতার সংজ্ঞা...

আরও পড়ুন
মুজিব শতবর্ষে বিতরণ করা হবে মুক্তিযুদ্ধের বই, মৈত্রীর বার্তা ভারতীয় হাইকমিশনের

Powered by Froala Editor