ব্ল্যাক কার্বনের পরিমাণ বেড়েছে ৪০০ গুণ, সংকটে গঙ্গোত্রী-সহ হিমালয়ের হিমবাহ

ভারতের প্রধান নদী গঙ্গার উৎসমুখ। সেই গঙ্গোত্রী হিমবাহই সংকটের মুখে। হিমালয়ের হিমবাহ-সংলগ্ন অঞ্চলে ক্রমাগত বাড়ছে ব্ল্যাক কার্বনের পরিমাণ। তাতেই বিপদের মুখে পড়েছে গঙ্গোত্রী-রা। ওয়াদিয়া ইন্সটিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির গবেষকদের করা সাম্প্রতিক এই সমীক্ষায় চিন্তার মুখে পরিবেশকর্মী ও ভূতাত্ত্বিকরা।

আরও পড়ুন
থই পাননি আবিষ্কারকও, ১১৭ বছরের ধাঁধার সমাধান করেছিলেন এক ভারতীয়

২০১৬ সাল থেকে হিমালয়ের ওপর টানা পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছেন এই বিজ্ঞানীরা। তাতেই উঠে এসেছে এই ভয়ংকর তথ্য। তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রীষ্মে অর্থাৎ মে মাসের আশেপাশে ওই অঞ্চলের বাতাসে ব্ল্যাক কার্বনের ঘনত্ব বেড়ে যায়। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে কম থাকে। কিন্তু আগে যা ছিল, এখন ব্ল্যাক কার্বনের পরিমাণ তার ৪০০ গুণ বেশি হয়ে গেছে!

আরও পড়ুন
গোটা দেশে, এমনকি কলকাতায় আজো প্রকাশ্যে বিকোচ্ছে অ্যাসিড, লড়াই থামেনি, বলছেন লক্ষ্মী আগরওয়াল

জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণ হিসেবে তালিকায় সবার আগে যদি আসে কার্বন ডাই-অক্সাইড, দ্বিতীয় নামটিই আসবে ব্ল্যাক কার্বনের। জীবাশ্ম জ্বালানি আর বায়োমাসের অসম্পূর্ণ দহনের ফলে এই বস্তুটির উৎপত্তি। এর বিশেষ ক্ষমতাগুলির মধ্যে অন্যতম হল তাপ ধরে রাখা। আলো শোষণও করতে পারে নিজের মধ্যে। আর এইসবের কারণেই পরিবেশবিদদের অন্যতম মাথাব্যাথা এই ব্ল্যাক কার্বন। গঙ্গোত্রী-সহ বেশ কিছু হিমালয়ের অংশে এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় প্রমাদ গুনছেন সবাই। মাটিতে নেমে এলে, ব্ল্যাক কার্বন তার জমে থাকা তাপ জমিতে ছড়িয়ে দেয়। ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। হিমালয় অঞ্চলে এটা ঘটলে বরফ গলে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন
খোদ কলকাতায় বাঘের দৌরাত্ম্য, তোলপাড় সে-আমলের খবরের কাগজ

নতুন এই রিপোর্ট চিন্তায় ফেলেছে সবাইকে। এমনিতে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বদলাচ্ছে জলবায়ুর চরিত্রও। নানা জায়গার বরফ গলতে আরম্ভ করেছে। এদিকে হিমালয়ের মতো জায়গায় যদি এই হারে ব্ল্যাক কার্বন বাড়তে থাকে, তবে তা ভারতের জন্যই সমূহ বিপদ। পাহাড় দূষিত তো হবেই, নদীগুলোর অস্তিত্বও সংকটে পড়বে। কিন্তু আমরা সচেতন কি? হিসেব অনুযায়ী, ব্ল্যাক কার্বন নির্গত দেশগুলির মধ্যে ভারত দ্বিতীয়! দূষণ তো আমরাই তৈরি করছি। এই পরিসংখ্যানে সদর্থক বদল আনতে গেলে শুধু নিয়ম নীতি নয়, আমাদেরও যে উদ্যোগ নিতে হবে।