দেশ-বিদেশের ক্রীড়াব্যক্তিত্বদের নিয়ে সুন্দরবন আর বইপাড়ার পাশে 'বাইচ'

একে করোনা, তার ওপর আমফানের তাণ্ডব। সুন্দরবন থেকে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট, নদীয়া— গোটা দক্ষিণবঙ্গ বিপর্যস্ত। একপ্রকার বেঁচে থাকার লড়াই করছে সবাই। বাস্তবের ময়দানে নেমে পড়েছি আমরা সবাই। এমন অবস্থায় বিপদে পড়া মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন অনেকে। এবার সেই উদ্যোগেই সামিল হল একদল খেলাপাগল তরুণ। খেলা, লেখা আর ত্রাণ— সবকিছু একসঙ্গে নিয়ে মাঠে নামছে ‘বাইচ’। এমন উদ্যোগের সঙ্গী আমরা, অর্থাৎ প্রহর.ইন-ও। 

‘বাইচ’ আসলে একটি ই-পত্রিকা। যার মূল চালচিত্র হল খেলা। পাতার পর পাতায় উঠে এসেছে লড়াইয়ের গল্প, জেতার গল্প, জিততে চাওয়ার গল্প। আসলে আমাদের জীবনটাও খেলার মাঠের থেকে কম উত্তেজক নয়। প্রতিটা মুহূর্তে আসছে বিষাক্ত বাউন্সার; কখনও জোরালো ফ্রি কিকে আমাদের ঘর ভেঙে পড়ছে। আমফান সেরকমই একটি দুর্যোগ। এক ধাক্কায় ভেঙে দিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের মেরুদণ্ড। হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া; লণ্ডভণ্ড সমস্ত সংসার। হঠাৎ ভেসে আসবে একটা বাক্য- ‘ফাইট, কোনি ফাইট!’ আর সাদা পর্দায় ফুটে উঠবে একের পর এক জিতে যাওয়ার আখ্যান। শিরা ওঠা হাতের ঘাম ঝরানো লড়াইয়ের মুহূর্ত। বাইচের দেশের মানুষের এমন লড়াইয়ে পাশে দাঁড়ানোর জন্যই এগিয়ে এল টিম ‘বাইচ’… 

এমন সব কাহিনি নিয়েই আসল ‘বাইচ’। এমন নাম কেন? পত্রিকার অন্যতম উদ্যোক্তা সোহম দাস প্রহরকে জানালেন, “বাইচ আসলে গ্রামবাংলা ও ভারতের প্রাচীন এক খেলা। ইংরেজিতে যাকে ‘রোয়িং’ বলি। আজও ভারতের অনেক জায়গায় প্রতিযোগিতার আসর বসে। আবার এটি জলের খেলা। একের পর এক ঢেউ, প্রতিকূলতা ভেঙে বাইচ এগিয়ে যায় গন্তব্যের দিকে। সবাই মিলে একসঙ্গে দাঁড় টানা, জল, মাটি, শ্যাওলা ভেঙে এগিয়ে যাওয়া। এটাই তো বাইচ। এটাই তো লড়াই, জলের ভেতর চলেছে সেই যুদ্ধ। সেটা যাতে ফুটে ওঠে, সেজন্যই এমন নাম। সেই সঙ্গে খেলার প্রসঙ্গও চলে আসছে।”

একের পর এক মণিমুক্তো ছড়ানো বাইচের পাতায়। আজই যার শুভ উদ্বোধন। অনলাইনে, সোশ্যাল মিডিয়াতেই মুক্তি পেল এই ই-পত্রিকা। থাকছে মহম্মদ আলি, অনুষ্টুপ মজুমদার, অরুণ লাল, বিরাট কোহলি-তামিম ইকবালের সাক্ষাৎকার; তুলসীরাম বলরাম, শ্যাম থাপা, কম্পটন দত্তদের স্মৃতিচারণা। সঙ্গে থাকছে একগুচ্ছ নিবন্ধ, গল্প। বাকিটা থাকুক বাইচের পাতায়। বরং চাক্ষুষই হাতে, থুড়ি মোবাইলে নিয়ে দেখে নিন এমন জাদুভাণ্ডার! 

ইতিমধ্যেই অরুণ লাল, রঞ্জিত বাজাজের মতো ব্যক্তিত্ব শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন বাইচের টিমকে। তবে এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল এর আসল উদ্দেশ্য। সামান্য টাকার বিনিময়ে এই পিডিএফ পত্রিকা সংগ্রহ করে নিতে পারেন আপনিও। সেই সংগৃহীত টাকা পৌঁছে যাবে সুন্দরবনের মানুষের কাছে। এই প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা সোহম দাস বললেন, “শুধু সুন্দরবন নয়, বইপাড়া মানে কলেজ স্ট্রিটের পাশেও আমরা যথাসাধ্য সাহায্য নিয়ে দাঁড়াব। তবে এরা ছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের আরও অনেক জায়গা আছে, যেখানেও ক্ষতির পরিমাণ যথেষ্ট। নদীয়া হোক, বা হাওড়া, হুগলি— অনেক জায়গাই আছে। আমরা তাঁদের পাশেও দাঁড়াতে চাই।”

সেইসঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদনও রাখছেন তিনি। “এই পত্রিকা ই-পত্রিকা। পিডিএফ ফরম্যাটে পৌঁছে যাবে ক্রেতাদের কাছে। এখনও অবধি ভালো সাড়া পড়েছে। এরপরও সবাই সাহায্য করতে পারেন। তবে সবার কাছে বিনীত অনুরোধ, এই পত্রিকার পিডিএফ বিনামূল্যে যেন ছড়িয়ে না পড়ে। বাইচের প্রকাশ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। যা টাকা উঠবে তার পুরোটাই আমরা তুলে দেব ওই মানুষগুলোর হাতে। যদি বিনামূল্যে সবার কাছে পৌঁছে যায়, তাহলে এই উদ্দেশ্যটা কোথাও ব্যর্থ হয়ে যায়। আমাদের টিমের বিনীত অনুরোধ, এমনটা যাতে না হয়।” তবে শুধু সোহমই নন, সেইসঙ্গে অর্পণ গুপ্ত, ছন্দক গুহ, অরিন্দম মুখোপাধ্যায়, সন্তু দাস, সরোজ দরবার-সহ একঝাঁক যুবকের সামগ্রিক লড়াইয়ের ফসল এই পত্রিকা।

আজই সামনে এল ‘বাইচ’। সংগ্রহ করতে পারেন আপনিও। বিনিময় মূল্য মাত্র ১০০ টাকা। তবে টাকার কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। সমস্ত ডিটেলস নিচে দেওয়া হল— 

টাকা পাঠাতে পারেন এই সমস্ত উপায়ে, যে কোনো সময়- 

UNION BANK OF INDIA
A/C NO: 415402010995925
IFSC: UBIN0541541
A/C HOLDER NAME: ARPAN GUPTA
BRANCH: BURDWAN

PHONE PAY - 9038197967 (ARPAN GUPTA)
GOOGLE PAY - 9038197967 (ARPAN GUPTA)
PAYTM - 9910270432 (SAURANGSHU SINHA)

টাকা পাঠিয়ে আপনারা স্ক্রিনশট পাঠিয়ে দিন নিচে দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরগুলির যে-কোনো একটিতে -

SUMIT KOLEY - 9038179296
ARITRA MONDAL - 8697279862
ARINDAM MUKHOPADHYAY – 8584031804

এখান থেকেই সময়মতো পিডিএফ পত্রিকাটি আপনাদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

Powered by Froala Editor