ছিল চিংড়ির খোলস, হয়ে গেল প্লাস্টিক - অস্ট্রেলিয়ার কিশোরীর আবিষ্কার

চিংড়ির নাম উঠলে কারোর জিভে জল আসে, কেউ আবার নাক সিঁটকে পালিয়ে যান দূরে। এ যে জলের পোকা! কিন্তু এই ‘পোকা’তেই মজেছে বিশ্বের অনেকে। এখানের ঘটিরা তো বটেই। কিন্তু চিংড়ি দিয়ে কি প্লাস্টিক তৈরি করা যায়? ব্যাপারটা খানিক উদ্ভট লাগলেও, ঠিক এই কাজটিই করেছেন অস্ট্রেলিয়ার এক ১৭ বছরের মেয়ে। চিংড়ির খোসা বা খোলস ব্যবহার করে তৈরি করে ফেলেছে জৈব প্লাস্টিক। যা মাটিতে ফেলে রাখলে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর মিশে যাবে!

আরও পড়ুন
প্লাস্টিক সংগ্রহ করতে বেরিয়েছে টোটো, অভিনব উদ্যোগ শান্তিনিকেতনে

চিংড়ি তো খাই, কিন্তু তার খোসাগুলো ফেলে দিই ডাস্টবিনে। স্বাভাবিক, সেগুলো তো আর খাওয়ার জিনিস নয়। কিন্তু অ্যাঞ্জেলিনা অরোরা সেরকমটা ভাবেননি। নাম শুনে একটু চমকে গেলেন না? হ্যাঁ, ভারতীয় বটে; কিন্তু অস্ট্রেলিয়া নিবাসী। সেখানেই পড়াশোনা। চারিদিকের প্লাস্টিকের সমস্যায় যখন জর্জরিত গোটা বিশ্ব, তখন মেডিসিনের ছাত্রী অ্যাঞ্জেলিনা ভাবছেন কী করে জৈব প্লাস্টিক তৈরি করা যায়; যা মাটিতে একটা সময় মিশে যাবে? ইতিমধ্যেই কলাপাতা আর কর্ন স্টার্চ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়ে গেছে। কিন্তু মনমতো ফলাফল আসেনি।

আরও পড়ুন
প্লাস্টিক খেয়ে হজম করে ফেলে শুঁয়োপোকা, পরিবেশ রক্ষায় নয়া আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের

হঠাৎই ঘটে গেল সেই আশ্চর্য ঘটনা। আর্কিমিডিসের ভাষায়, ‘ইউরেকা’! একদিন খেতে খেতে দেখেন, প্লেটে চিংড়ি পড়ে আছে। এটা তো নতুন ব্যাপার নয়। কিন্তু ওদিন যেন নতুন কিছু মনে হল। চিংড়ির খোলসগুলো কেমন প্লাস্টিকের মতো না! ব্যস, কেল্লাফতে! সেই চিংড়ির খোলস দিয়েই তৈরি হল প্লাস্টিক। পরীক্ষার পর পাশও করল সেটা। মাটিতে ফেলে রাখলে ৩৩ দিনের মধ্যে পুরোপুরি মিশে যায়। দেখতে অন্যান্য প্লাস্টিকের মতোই; তফাৎ কেবল স্বভাবে। এটিই এখন বেশ কিছু কোম্পানি ব্যবহারও করছে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার জিওগ্রাফিক সোসাইটির পক্ষ থেকে অ্যাঞ্জেলিনা অরোরা’কে ইয়ং কনজারভেশনিস্টের তকমা দেওয়া হয়। আর দেবে নাই বা কেন! এরকম একটি আবিষ্কার শুধু আমাদের কেন, পৃথিবীর দূষণের সমস্যায় একটা বড়ো সমাধান হতে পারে।

More From Author See More