১৭১৫টি বসবাসযোগ্য গ্রহ থেকে দৃশ্যমান পৃথিবী, ইঙ্গিত ভিনগ্রহীদের দিকেই?

ভিনগ্রহীদের নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই মানব সভ্যতার। অবশ্য তাদের অস্তিত্ব নিয়ে অবকাশ রয়েছে বিতর্কেরও। কোনো কোনো বিজ্ঞানীদের অভিমত পৃথিবী ছাড়া প্রাণ নেই ব্রহ্মাণ্ডের অন্য কোনো গ্রহে। আবার পৃথিবীর বাইরের সভ্যতার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের অনবরত চেষ্টা করে চলেছেন বহু গবেষক। আর ভিনগ্রহীরা? তারা যদি সত্যিই থেকে থাকে, তবে তাদের নজরদারিতেও কি রয়েছে আমাদের সভ্যতা? এবার এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এক অভিনব গবেষণা চালালেন মহাকাশবিদরা।

হ্যাঁ, মহাকাশবিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক অনুমান জানাচ্ছে, একটি-দুটি নয়, আকাশগঙ্গার ১৭১৫টি পৃথক পৃথক নক্ষত্রমণ্ডলের গ্রহ থেকেই অবাধে নজরদারি চালানো সম্ভব পৃথিবীর ওপরে। তবে কেবলমাত্র প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা আছে, এমন গ্রহগুলিকেই এই তালিকায় জায়গা করে দিয়েছেন গবেষকরা। কিন্তু কীভাবে চিহ্নিত করা হল এই গ্রহগুলিকে? আর এতদূর থেকে কীভাবেই বা নির্ধারণ করা গেল সেখানে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা রয়েছে?

নক্ষত্রের সামনে তার প্রদক্ষিণরত গ্রহ চলে এলে, খানিকটা হলেও হ্রাস পায় সেই নক্ষত্রের দ্যুতি। তা কতটা হ্রাস পাচ্ছে, হ্রাস পাওয়ার সময়সীমাই বা ঠিক কী— তার ওপর নির্ভর করেই সেই গ্রহের প্রদক্ষিণকাল, নক্ষত্র থেকে দূরত্ব এবং গ্রহের উষ্ণতার একটা অনুমান পান গবেষকরা। জানা যায় সেই গ্রহ বসবাসের যোগ্য কিনা। এই পদ্ধতিতেই ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ‘গায়া’ স্পেসক্রাফটের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছিল প্রায় ৩ লক্ষ ৩১ হাজার নক্ষত্র ও তাদেরকে প্রদক্ষিণরত গ্রহের তথ্য। সেখান থেকেই বাছাই করে মূল তালিকাটি প্রস্তুত করেন বিজ্ঞানীরা। গত বুধবারই এই গবেষণা প্রকাশ পায় নেচার পত্রিকায়।

তবে এই তালিকাও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়। আসলে নিজেই ক্রমশ অবস্থান পরিবর্তন করে চলেছে সৌরমণ্ডল ও অন্যান্য নক্ষত্রগুলি। ফলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর কোনো বিশেষ গ্রহগুলির কাছে দৃশ্যমান হয় পৃথিবী। তারপর আবার চলে যায় দৃষ্টির অগোচরে। এই হিসাব অনুযায়ীই আগামী পাঁচ হাজার বছরে আরও ৩১৯টি নক্ষত্রমণ্ডল জুড়তে চলেছে এই তালিকায়। ফলে সংখ্যাটি দাঁড়াবে ২ হাজারের কাছাকাছি। এমনটাই জানাচ্ছেন গবেষণার মূল লেখক তথা কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ল সাগান ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর লিসা কালটেনেজার। 

আরও পড়ুন
নক্ষত্রের উল্টোদিকে প্রদক্ষিণ গ্রহের, আগেকার ধারণা ভেঙে দিল সাম্প্রতিক আবিষ্কার

কিন্তু গবেষকদের এই প্রকল্প আদৌ কি সত্যিই? সত্যিই কি কোনো ভিনগ্রহী সভ্যতা নজরদারি চালাচ্ছে পৃথিবীর ওপরে? না, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাননি ডঃ কালটেনেজার। কিন্তু ভিনগ্রহীদের অস্তিত্বের ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী তিনি। এই ধরনের গ্রহগুলিতে পাঠানো হচ্ছে বেতার তরঙ্গও। এখন দেখার সত্যিই কোনো প্রত্যুত্তর ফিরে আসে কিনা সেখান থেকে। তবে পৃথিবী থেকে তাদের দূরত্ব প্রায় কয়েকশো আলোকবর্ষ। ফলে, সে উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে তারও দ্বিগুণ সময়। ততদিন কি বেঁচে থাকবে মানব সভ্যতা? 

আরও পড়ুন
পৃথিবীর থেকে ১০ গুণ ভারী, সৌরজগতেই লুকিয়ে ‘অদৃশ্য’ গ্রহ?

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সৌরজগতের মতোই নক্ষত্র ও গ্রহসমাবেশ; ২০০ আলোকবর্ষ দূরের সন্ধান দিল পড়ুয়ারা