একাই শেষ করলেন পাকিস্তানের ব্যাটিং, এক ইনিংসে ১০ উইকেট অনিল কুম্বলের

৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৯। আজ থেকে ঠিক ২১ বছর আগের একদিন। ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ খেলা হচ্ছে; আর বিপক্ষের নাম? পাকিস্তান! প্রত্যাশা, চাপ, টেনশন— সমস্ত কিছুরই ঊর্ধ্বসীমা অতিক্রম হয়েছিল। আর ইতিহাস তো এই পরিস্থিতিতেই তৈরি হয়! গোঁফওলা, শ্যামলা রঙের এক লেগ স্পিনার তৈরি করলেন সেই মুহূর্ত। পাকিস্তানের একটি ইনিংসে দশটা উইকেট একাই নিলেন তিনি। গোটা ক্রিকেট বিশ্ব তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করল এই দৃশ্য। খেলার মানচিত্রে এই দিনই উঠে গেল আরও এক কিংবদন্তির নাম, অনিল কুম্বলে। ২৬.৩-৯-৭৪-১০, ১৯৯৯-এর ৭ ফেব্রুয়ারিকে বর্ণনা করার জন্য এই বোলিং ফিগারটিই যথেষ্ট। 

দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলার দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। আগের টেস্ট ম্যাচটি ১২ রানে জিতে গেছে পাকিস্তান। দেশের মাটিতে যাতে এভাবে সিরিজ না হারতে হয়, তার জন্য মরিয়া ছিল ভারতীয় দল। ক্যাপ্টেন আজহারউদ্দিন-সহ গোটা টিম নিজের সেরাটা দিয়ে খেলছিল। কিন্তু পাকিস্তানেও তখন একের পর এক সেরা প্লেয়ার। বোলিংয়ে ওয়াসিম আক্রম, ওয়াকার ইউনিস, শাকলিন মুস্তাকরা তো আছেনই; ব্যাটেও আছেন সইদ আনোয়ার, ইনজামাম-উল হক, শাহিদ আফ্রিদি, মহম্মদ ইউনুসরা। ভারতেও কম প্রতিভা ছিল না। এস পাওয়ার, আজহারউদ্দিন আর সৌরভ গাঙ্গুলির চেষ্টায় পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য রাখা হয় ৪২০ রানের।

টানা দুদিন খেলার সময় পেয়েছিল পাকিস্তান। শুরুতেই ১০১ রানের পার্টনারশিপ করেন আনোয়ার-আফ্রিদি। গোটা ফিরোজ শাহ কোটলা চুপ! হয়ত জিতেও যেত। কিন্তু ক্রিকেট দেবতা অন্যরকম কিছু ভেবে রেখেছিলেন। অন্যরকম ভেবেছিলেন অনিল কুম্বলেও। প্রথমেই নিলেন শাহিদ আফ্রিদির উইকেট। লাঞ্চের পরের টি-ব্রেকের আগেই পরপর নিয়ে নেন ৬টি উইকেট। তখনই কি ভাবছিলেন, আজ হয়তো হয়ে যেতে পারে কীর্তিটা?

শেষ পর্যন্ত হলও সেটা। ৭৪ রান দিয়ে পাকিস্তানের ১০টি উইকেটই নিলেন তিনি। স্কোরকার্ড তখন কুম্বলে-ময়। স্টেডিয়ামও! ইংল্যান্ডের জিম ল্যাকারের পর তিনিই দ্বিতীয় বোলার, যিনি এক ইনিংসে ‘পারফেক্ট টেন’ করেছিলেন। ভারতেও আজ অবধি তিনিই এক ও একমাত্র। কিংবদন্তির জন্ম তখনই হয়ে গিয়েছিল। ভারতও তার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বড় জয় পায়। ২১২ রানে জিতে সিরিজের সমতাও ফেরায়।      

More From Author See More