জানুয়ারিতে বনচ্ছেদন, ১৪ বছরে সর্বাধিক – ঘোর সঙ্কটে আমাজন

অনেক ক্ষেত্রেই বছরের শুরুটা জানিয়ে দেয়, আগামী মাসগুলো কেমন যাচ্ছে। আর চলতি বছরের শুরুতেই আশঙ্কার কথা শোনাল ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আইএনপিই। শুধুমাত্র ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসেই আমাজনের (Amazon) যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, ১৪ বছরের ইতিহাসে তা কখনও ঘটেনি। শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসের হিসাব ধরলে ২০০৮ সালে শেষ এই পরিমাণ বনভূমি ধ্বংস (Deforestation) হয়েছিল। এনইপির পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত মাসে ৪৩০ বর্গকিলোমিটার অরণ্য হারিয়েছে আমাজন। যেখানে গতবছরের জানুয়ারি মাসে এই পরিমাণটা ছিল ৮৩ বর্গকিলোমিটার। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ শতাংশ বেশি বনভূমি ধ্বংস হয়েছে।

যদিও এনইপির বার্ষিক পরিসংখ্যানকেই সবসময় বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। তার সবচেয়ে বড়ো কারণ সবসময় আকাশের অবস্থা একরকম থাকে না। বিশেষ করে বর্ষাকালে মেঘের কারণে স্পষ্ট হিসাব পাওয়া যায় না সবসময়। কিন্তু জানুয়ারি মাসের পরিসংখ্যানকে কিছুটা আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় সবসময়ই। কারণ এই সময় আকাশ সম্পূর্ণ মেঘমুক্ত থাকে। ফলে বনভূমি জরিপ করার কাজটা সহজ হয়। তাছাড়া বর্ষার পরেই বে-আইনি বৃক্ষচ্ছেদনের ঘটনাও বাড়তে থাকে। আমাজন নিয়ে আশঙ্কার কথা দীর্ঘদিন ধরেই বলছিলেন পরিবেশকর্মীরা। আর সেই আশঙ্কাকেই আরও ঘনিয়ে তুলল এনইপি-র এই পরিসংখ্যান।

এনইপির পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে ৬০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি বনভূমি ধ্বংস হয়েছিল আমাজনে। এরপর কোনো বছরই জানুয়ারি মাসে ৩০০ বর্গকিলোমিটারের বেশি বনভূমি ধ্বংস হয়নি। ২০১০ থেকে ২০১৩ এই চার বছরের জানুয়ারি মাসে ৫০ বর্গকিলোমিটারেরও কম বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। এরপর এই পরিমাণটা কখনও বেড়েছে আবার কখনও কমেছে। তবে চলতি বছরে নতুন করে আশঙ্কা জাগাচ্ছে এই পরিসংখ্যান। আর সবচেয়ে বড়ো কথা, এই পরিমাণটিই চূড়ান্ত নয়। কারণ ইতিমধ্যে আমাজনের কাঠ পাচারকারীদের এমন কিছু পদ্ধতির সন্ধান পরিবেশকর্মীরা পেয়েছেন, যাতে স্যাটেলাইটের ছবিতে সবকিছু ধরা পড়ে না। ফলে বাস্তবটা আরও ভয়াবহ, তাতে সন্দেহ নেই। ব্রাজিল সরকার কি এখনও পরিবেশ নিয়ে উদাসীন হয়েই থাকবে? এই প্রশ্নই ঘুরছে সকলের মনে।

Powered by Froala Editor