কনিষ্ঠতম মহিলা হিসাবে আটলান্টিক পার, নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়ার লক্ষ্য জ্যাসমিনের

গত জুলাই মাসের কথা। ব্রিটেনে তখন গ্রীষ্মের ছুটি। সঙ্গীত উৎসব, বার্বিকিউ, পিকনিকে মেতে রয়েছে সকলে। তবে এসবের মধ্যেই সুইমসুইট পরে সমুদ্রের জলে নেমেছিলেন তিনি। যুক্তরাজ্যের পশ্চিম উপকূল ধরে একটানা সাঁতরে পার হয়েছিলেন ৯০০ মাইল পথ। তৈরি করেছিলেন আশ্চর্য এক বিশ্বরেকর্ড। এই মহাকাব্যিক যাত্রার পর এবার ফের নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরির লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করলেন তিনি। 

জ্যাসমিন হ্যারিসন (Jasmine Harrison)। যুক্তরাজ্যের (UK) উত্তর ইয়র্কশায়ারের থির্স্কের এই বাসিন্দার বয়স মাত্র ২৩ বছর। তা সত্ত্বেও দুঃসাহসিক অভিযানের জগতে রীতিমতো নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করেছেন ব্রিটিশ তরুণী। ২০২১ সালে ছোট্ট ডিঙিতে চেপে, রোয়িং করে আটলান্টিক মহাসাগর পার করেছিলেন জ্যাসমিন। বিশ্বের কনিষ্ঠতম মহিলা রোয়ার হিসাবে তৈরি করেছিলেন আশ্চর্য এক বিশ্বরেকর্ড। তারপর চলতি বছরে ফের সমুদ্রে নেমেছিলেন এক ভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে। সাঁতরে ব্রিটেনের সমদৈর্ঘ্য পথ অতিক্রম করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। 

না, খুব কিছু সহজ ছিল না এই কাজ। প্রতিদিন ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় তাঁকে কাটাতে হয়েছিল জলে। কখনও জেলিফিসের দংশনের শিকার হতে হয়েছিল, কখনও আবার সম্মুখীন হতে হয়েছিল হাঙ্গরের। তবে হাল ছাড়েননি তিনি। গড়ে প্রতিদিন অতিক্রম করেছিলেন ২৭ নটিক্যাল মাইল পথ। অর্থাৎ, প্রায় ৫০ কিলোমিটার। মাত্র ১৯ দিনে অতিক্রম করেছিলেন যুক্তরাজ্যের পশ্চিম উপকূল। 

অবশ্য জ্যাসমিনের এই দুঃসাহসিক অভিযান সফল হলেও, অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। একদিকে যেমন দীর্ঘসময় জলে কাটানোর জন্য আক্রান্ত হয়েছিলেন ‘সল্টি মাউথ’ রোগে, তেমনই জেলিফিসের কামড়ে প্রভাবিত হয়েছিল তাঁর শরীরের পেশি। পাশাপাশি দীর্ঘ ১৯ দিন না ঘুমানোর ক্লান্তি। আশ্চর্য এই অভিযানের পর পেরিয়ে গেছে ৫ মাস। তবে এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হতে পারেননি তিনি। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে পরবর্তী প্রকল্পের প্রস্তুতি। ডিসেম্বরের হাড় কাঁপানো শীতেও ফের সাঁতারের অনুশীলন শুরু করেছেন তিনি। লক্ষ্য, ২০২৩ সালে নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরি। তাঁর কথায়, নতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরির জন্যই সাঁতারের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন তিনি। অবশ্য কোথায় এই অভিযান চালাবেন তিনি, সে-ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছুই জানাননি ব্রিটিশ তরুণী। ২০২৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকেই চমকপ্রদ কোনো ঘোষণা সামনে আসবে, জানাচ্ছেন জ্যাসমিন…

Powered by Froala Editor

More From Author See More