পুরুষদের সঙ্গে শিকারে যেতেন মহিলারাও, প্রমাণ দিল ৯ হাজার বছর আগের দেহাবশেষ

আন্দিজ পাহাড়ের দক্ষিণে তখন পা পড়েছে মানুষের। একটু একটু করে গড়ে উঠছে জনবসতি। তবে সেই পথটা খুব সহজ নয়। অরণ্য অধ্যুষিত এলাকায় অসংখ্য জন্তুর সঙ্গে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ চলে। সে আজ থেকে ৯ হাজার বছর আগের কথা। মানুষ তখন পাথরের অস্ত্র ব্যবহার করতে শিখে গিয়েছে। আর প্রস্তরযুগের ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে মানুষই সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী। প্রতিটি গোষ্ঠীতে গড়ে উঠছে শিকারী দল। এমনই একটি শিকারী দলের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৬০ বছর আগে।

পেরুর এই প্রাচীন জনগোষ্ঠীর দেহাবশেষ নিয়ে এর আগে বহু আলোচনা হয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে। বহু ঐতিহাসিক গবেষণায় স্থান পেয়েছে এই নমুনা। কিন্তু সেখানেই থেকে গিয়েছে একটু গলদ। সম্প্রতি সেই গলদের দিকেই নির্দেশ করলেন অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটির গবেষক জিম ওয়াটসন। চলতি বছরের শুরুতেই তিনি দেখিয়েছেন, ‘বিগ ম্যান’ নামে পরিচিত এই শিকারী গোষ্ঠীর প্রত্যেকে ‘ম্যান’ অর্থাৎ পুরুষ নয়। তার মধ্যে আছেন একজন মহিলাও।

একটি দেহাবশেষের অ্যানাটমি পরীক্ষা করে নিশ্চিতভাবে সেটিকে মহিলা বলে প্রমাণ করলেন ওয়াটসন। আর তারপরেই অ্যারিজোনা এবং ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকরা আবার নতুন করে শুরু করলেন গবেষণা। আর তারপর দেখা গেল, একটি নয়, ১০টি শরীর আসলে মহিলার। আর পুরুষের সংখ্যা ১৬টি। কিন্তু শিকারী বলতেই তো আমাদের মনের মধ্যে ভেসে ওঠে একজন পুরুষের ছবি। তাই প্রস্তরযুগের এই নমুনাগুলির লিঙ্গ যাচাইয়ের কথা মনে হয়নি কারোরই। কিন্তু মানব সভ্যতার ইতিহাসে মহিলাদের শিকারের অভিজ্ঞতা বিরল নয় বলেই জানাচ্ছেন ওয়াটসন। পিতৃতন্ত্রের বুনটের মধ্যেও বারবার এগিয়ে এসেছেন মহিলারা। আর প্রস্তরযুগে যে পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই লড়াই করেছেন মহিলারা, সেকথাই প্রমাণ হল আবারও।

Powered by Froala Editor