৫০০০ বছর আগেকার পেঙ্গুইনদের কবর; বিস্মিত গবেষকরা

আন্টার্কটিকার রস সমুদ্র উপকূল। আর সেখানে নাকি পড়ে আছে অজস্র মৃত পেঙ্গুইনের দেহ। কিছু পচে গেছে। আর কিছু তখনও তরতাজা। কিন্তু পেঙ্গুইনের এই গণমৃত্যুর কারণ কী? পরিবেশ দূষণ নাকি কোনো অজানা রোগ? কিন্তু অদূর ভবিষ্যতেও যে ওই অঞ্চলে পেঙ্গুইনের বসবাস ছিল, এমন কোনো তথ্যেরই রেকর্ড নেই। তবে এর পিছনে রহস্যটা কী? ২০১৬ সালে একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এই খবর দেখেই ওই স্থানে ছুটে যান পক্ষীবিজ্ঞানী স্টিভেন এমিলসলি। চার বছর পর সম্প্রতি সমাধান মিলল সেই ধাঁধার।

না, সংবাদমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়নি। তা গিয়েই বুঝেছিলেন এমিলসলি। সমুদ্রের উপকূল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে হাজার হাজার ছোটো ছোটো নুড়ি। আর তার মধ্যেই পড়ে আছে অ্যাডেলি প্রজাতির পেঙ্গুইনদের মৃতদেহ, ডিমের খোলা। অধিকাংশ পেঙ্গুইনই সদ্যোজাত। কোনো কোনো দেহে তখনও জুড়ে রয়েছে পালক, টাটকা ভাব। বেশ কিছু পেঙ্গুইনের দেহ সংরক্ষণ করে নিয়ে আসেন তিনি। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার জন্য।

পেঙ্গুইনের হাড়, পালক এবং কোশ আলাদা করে কার্বন ডেটিং করেন এমিলসলি। আর তাতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। একসঙ্গে মৃত্যু হয়নি পেঙ্গুইনগুলির। এর মধ্যে কিছু পেঙ্গুইনের বয়স আন্তত ৫ হাজার বছর। আবার কিছুর বয়স ৮০০ বছরের কাছাকাছি। ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যায় তাঁর কাছে। বরফের তলায় চাপা পড়ে ছিল তারা এতদিন। বরফ গলতেই বেরিয়ে এসেছে তাদের মৃতদেহ। 

এমিলসলি জানান, সম্ভাব্য তিনটি পৃথক সময়ে ওই অঞ্চলে বসবাস ছিল পেঙ্গুইনদের। একটি ৩০০০-৫০০০ বছর আগে। অন্য দুটি মোটামুটি ২০০০ ও ১০০০ বছর আগে। প্রত্যেকবারই অতিরিক্ত তুষারপাতের ফলে চাপা পড়েছিল তাদের আবাস। নতুন করে বরফ গলে পাথুরে সমুদ্র উপকূল বেরিয়ে আসায় আবার পেঙ্গুইনরা যে ফিরতে পারে সেই সম্ভাবনাই দেখছেন এমিলসলি। তবে অন্যদিক থেকে বিশ্ব উষ্ণায়নের ভয়াবহতাও প্রকট হচ্ছে এই ঘটনায়। তাঁর এই গবেষণাকে সম্প্রতি মান্যতা দিয়েছে ‘জিওলজি’ বিজ্ঞান পত্রিকাও...

Powered by Froala Editor