একনজরে এবারের নোবেলজয়ীরা

/৭

বিশ্বের সবথেকে সম্মানজনক পুরস্কার হিসাবেই বিবেচনা করা হয় নোবেল পুরস্কারকে। ফলত, কাদের হাতে উঠছে নোবেলের পদক— প্রতি বছর এই সময়টায় তা নিয়ে উন্মাদনা থাকে চরমে। গত ৪ তারিখ থেকে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করা শুরু করেছিল নোবেল কমিটি। গতকাল অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী ঘোষণার মাধ্যমে শেষ হল সেই মহড়া। নোবেল ‘লরিয়েট’-এর তালিকায় কারা কারা জায়গা পেলেন এই বছর? এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সেইসব ব্যক্তিত্বদের।

/৭

চলতি বছরে চিকিৎসাবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পেলেন ডেভিস জুলিয়াস এবং আর্ডেম পাতাপুতিয়ান। স্পর্শ এবং উষ্ণতার রিসেপ্টর সংক্রান্ত আবিষ্কারের জন্যই নোবেল সম্মানে ভূষিত হন এই দুই মার্কিন বিজ্ঞানী। বাহ্যিক পরিবেশের পরিবর্তন মানবদেহে কীভাবে অনুভূত হয়, সেই রহস্যেরই সমাধান দেন ডেভিড ও আর্ডেম। তাঁদের গবেষণায় উঠে আসে স্নায়ুতন্ত্রের তাপ ও যান্ত্রিক উদ্দীপকের আণবিক গঠন ও ভিত্তি। এক কথায় এই আবিষ্কার ও রহস্য সমাধানকে যুগান্তকারী বলেই মনে করছেন বিশ্বের প্রথমসারির গবেষকরা।

/৭

প্রকৃতির বিশৃঙ্খলা এবং খামখেয়ালি আচরণের মধ্যেও লুকিয়ে থাকে সুনির্দিষ্ট নিয়ম। সেই সূত্র খুঁজে বার করেই পৃথিবীর পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার পথ দেখান সুকোরো মানাবে, জিওর্জিও প্যারিসি এবং ক্লস হাসেলম্যান। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মানাবে এবং ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের গবেষক ক্লস হাসেলম্যান দেখান মানুষের কার্যকলাপের মাধ্যমে কীভাবে প্রভাবিত হচ্ছে পৃথিবীর জলবায়ু। বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়, টাইফুন, টর্নেডোর প্রকোপ। অন্যদিকে সাপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্যারিসি পরিবেশের এই খামখেয়ালিপনাকে উপস্থাপন করেন গাণিতিক সমীকরণের মাধ্যমে। তাঁর সমীকরণের ওপর ভিত্তি করেই ব্যবহারিকভাবে সম্ভব হয় আবহাওয়ার সুস্পষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া।

/৭

চলতি বছরে রসায়নে যৌথভাবে নোবেল পেলেন ডেভিড ম্যাকমিলান এবং বেঞ্জামিন লিস্ট। অপ্রতিসম জৈব অনুঘটন বিক্রিয়ার আণবিক গঠনের রহস্যভেদ করেন ডেভিড এবং লিস্ট। তবে দু’জনেই পৃথক পৃথকভাবে এগিয়েছিলেন গবেষণার কাজ। এমনকি ম্যাকমিলান নিজেও জানতেন না, তাঁর গবেষণার বিষয় নিয়ে কাজ হচ্ছে অন্যত্র। ওষুধ থেকে শুরু করে সৌরকোষে শক্তি সঞ্চয়— একাধিক ক্ষেত্রেই বিপ্লব এনেছে ডেভিড ও লিস্টের গবেষণা। তাঁদের গবেষণাকে হাতিয়ার করেই সহজ হয়েছে জটিল জৈব অণু তৈরির কাজ।

/৭

বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে হিংসা, হানাহানি। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই বাড়ছে শরণার্থী সমস্যা। শরণার্থীদের দুঃখ, দুর্দশা এবং যন্ত্রণার কথাই বার বার প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর লেখায়। উঠে এসেছে আফ্রিকার রাজনীতির অমানবিকতা। আব্দুলরাজাক গুনরাহ। চলতি বছরে সাহিত্যের নোবেল পদক উঠল তাঁর হাতেই। প্রথম আফ্রিকান কৃষ্ণাঙ্গ হিসাবে নোবেল জয় পেলেন তাঞ্জানিয়ার ঔপন্যাসিক তথা কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজি সাহিত্য এবং পোস্ট কলোনিয়াল স্টাডিজের অধ্যাপক গুনরাহ। ঔপনিবেশিক প্রভাবের আপোষহীন সমালোচনার জন্য এর আগেও বুকার পুরস্কারের মনোনয়ন পেয়েছিলেন গুনরাহ। এবার সর্বোচ্চ সম্মানের মুকুট উঠল তাঁর মাথায়।

/৭

ইয়েলো জার্নালিজম, পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদমাধ্যমের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও পথভ্রষ্ট হননি তিনি। বরং সত্য অনুসন্ধানই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য। গণতন্ত্রের চতুর্থস্তম্ভকে মজবুত করেই তাঁরা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন রাষ্ট্রের অনৈতিকতার বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য তাই এবার নোবেল পদক তুলে দেওয়া হয় রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভ এবং ফিলিপাইন্সের মারিয়া রেসার হাতে। ২০১২ সাল থেকে ‘র্যাপলার’ নামে একটি ডিজিটাল মিডিয়া সংস্থার তত্ত্বাবধান করছেন রেসা। অন্যদিকে বিগত ৩ দশক ধরে ‘নোভায়া গ্যাজেটা’ পত্রিকার সম্পাদনা করে আসছেন মুরাতভ। বাকস্বাধীনতার জন্য লড়তে গিয়ে ‘দেশদ্রোহিতা’-র তকমাও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেন তাঁর সাহসিকতার কাছে হার মানল রাষ্ট্রশক্তিই।

/৭

গত বছরের মতো এই বছরেও অর্থনীতিতে যৌথভাবে নোবেল পেলেন তিন ব্যক্তিত্ব— ডেভিড কার্ড, জোশুয়া অ্যাংগ্রিস্ট এবং গুইডো ইমবেনস। শ্রম অর্থনীতিতে অনস্বীকার্য অবদানের জন্য নোবেল পদক পান ম্যাসাচুসেট ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক ডেভিড কার্ড। অন্যদিকে জোশুয়া এবং গুইডো যৌথভাবে কাজ করেছেন কার্যকারণ সম্পর্ক নিয়ে। প্রাকৃতিক পরীক্ষানিরীক্ষা থেকে কার্যকারণ সম্পর্ক নিরূপণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে আনেন জোশুয়া ও গুইডো। তাঁদের গবেষণার মধ্যে আবর্তিত হয়েছে সমাজবিজ্ঞানের একাধিক জটিল বিষয়।

Powered by Froala Editor

More From Author See More