৩০ বছরে ১ কোটি ডিমেনশিয়া রোগী ভারতে!

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটু স্মৃতিশক্তি কমে আসা বা কিছু অদ্ভুত আচরণ, এসব অনেকেই হয়তো স্বাভাবিক মনে করেন। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, সারা পৃথিবীতে প্রাণঘাতী অসুখের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ডিমেনশিয়া। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি করে বাড়ছে রোগের প্রকোপ। আগামী ৩ দশকের মধ্যে যে তা আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিতে চলেছে, এমনটাই জানাচ্ছে ল্যানসেট পত্রিকার সাম্প্রতিক গবেষণা। গবেষকরা দেখিয়েছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে সারা পৃথিবীতে অন্তত ১৫ কোটি মানুষ ডিমেনশিয়ায় (Dementia) আক্রান্ত হবেন। আর শুধু ভারতেই ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ১৪ লক্ষ।

অন্যান্য অনেক রোগের তুলনাতেই হয়তো এই সংখ্যাটা এমনকিছু বেশি নয়। তবে ডিমেনশিয়া সমস্ত বয়সের মানুষকে আক্রমণ করে না। ৪০ বছরের পর ডিমেনশিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। ৬০ বছরের পর সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটাই। সেই দিক থেকে হিসাব করলে সংখ্যাটা সত্যিই উদ্বেগ তৈরি করে। তবে ইতিমধ্যেই গোটা পৃথিবীতে ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ৭০ লক্ষ। এর মধ্যে ভারতেই রয়েছেন ৩৮ লক্ষ ডিমেনশিয়া রোগী। অর্থাৎ সার্বিকভাবেই ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে প্রায় তিনগুণ। আর ভারতে সংখ্যাটা বাড়বে ১৯৭ শতাংশ।

ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের গবেষক ডঃ এমা নিকোলস এবং তাঁর সহযোগীরা মিলে তৈরি করেছেন এই পরিসংখ্যান। ডঃ নিকোলসের মতে, যেভাবে পৃথিবীর গড় আয়ু বাড়ছে, তাতে এমনটাই ঘটা স্বাভাবিক। তাছাড়া পরিবেশ দূষণের প্রভাব তো রয়েছেই। এমনকি পরিবার ব্যবস্থায় যে বদল বিগত কয়েক দশকে ঘটেছে, তাও ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। অনেক দম্পতিই সন্তান নিতে আগ্রহী নন। আবার সন্তান থাকলেও শেষ বয়সে তাদের পাশে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই বয়সকালে একাকিত্ব বাড়ছে। আর সেখান থেকেই বাড়ছে ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনা। এছাড়াও খাদ্যাভ্যাসে বদল, হৃদরোগের প্রকোপ ইত্যাদি নানা বিষয় ডিমেনশিয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। ক্রমবর্ধমান এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো চটজলদি উপায় নেই। তবে এখনই সচেতন না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার পিছনে দায়ী অনিদ্রাও, জানাচ্ছে গবেষণা