প্রয়াত জুলু উপজাতির রাজা, মৃত্যুতেও পিছু ছাড়েনি বিতর্ক

আন্তর্জাতিক মহলে যেমন বারবার সমালোচনার ঝড় তুলেছেন, তেমনই আবার দেশের মানুষের কাছ থেকে পেয়েছেন অকৃপণ ভালোবাসা। সেই সমস্ত বিতর্ককে পিছনে ফেলে বিদায় নিলেন জুলু উপজাতির রাজা। গুডউইল জুয়েলিথিনি। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ডায়াবেটিস ঘটিত উপসর্গের কারণেই রাজা গুডউইলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

দক্ষিণ আমেরিকার অতি প্রাচীন উপজাতি জুলু। আজও তারা নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে অনেকটাই। আর এর পিছনে রাজা গুডউইলের ভূমিকাকে অস্বীকার করতে পারেন না কেউই। তিনি ছিলেন কিংবদন্তি রাজা কেটসহাওয়ের পুত্র। ১৮৭৯ সালে যিনি বিক্রমের সঙ্গে ব্রিটিশ আক্রমণ প্রতিরোধ করেছিলেন। একইভাবে ঔপনিবেশিক প্রভাব থেকে উপজাতির মানুষদের বিরত রাখার কাজ করে গিয়েছেন রাজা গুডউইল।

অবশ্য এর জন্য তাঁকে বিতর্কও সহ্য করতে হয়েছে অনেক। ২০১৫ সালে তিনি সমস্ত বিদেশিদের জুলু ভূখণ্ড ছেড়ে যেতে বলেছিলেন। সারা পৃথিবীর যুক্তিবাদী মানুষ সেই বক্তব্যের বিরুদ্ধে মুখর হয়েছিলেন। তবে গুডউইল যে স্পষ্টবাদী মানুষ ছিলেন, তাতে সন্দেহ নেই। তিনি সত্যিই আশঙ্কা করেছিলেন, বিদেশিদের প্রভাবে হারিয়ে যাবে জুলু সংস্কৃতি। নিজের প্রাচীন চিন্তাধারাকে আঁকড়ে থাকার জন্য তাঁকে রক্ষণশীল, স্বৈরাচারী বলেও মনে করেন অনেকে। এমনকি রাজা গুডউইলের মৃত্যুর পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। রাজপরিবার থেকে জানানো হয়েছে, তাঁর মৃত্যুর অনুষ্ঠানকে ঘিরে কুমারীত্ব রক্ষার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা হবে। তবে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এই প্রচার নিন্দনীয় হলেও জুলু সংস্কৃতিতে তা একেবারেই নয়।

দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছিলেন রাজা গুডউইল। আগের সপ্তাহেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রিয় রাজার আরোগ্য কামনা করে নানা অনুষ্ঠান পালন করেন জুলু উপজাতির মানুষরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শরীরের কাছে পরাজয় মানতেই হল। রাজা গুডউইলের পর আর কেউ জুলু সংস্কৃতিকে ঔপনিবেশিক প্রভাবের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন কি? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য সময় দেবে।

আরও পড়ুন
সভ্য মানুষদের ‘ভালোবাসা’য় আতঙ্কিত জাপানের আইনু উপজাতি, দূরত্ব বাড়ছে আরও

Powered by Froala Editor

More From Author See More