জেলবন্দি কবি ভারভারা রাও অসুস্থ, ভর্তি হাসপাতালে; যত্ন নেওয়ার নির্দেশ কোর্টের

দলিতদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের হয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন; এই ছিল ‘অপরাধ’। স্রেফ সন্দেহের বশে দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় জেলে বন্দি আছেন তিনি। নানা উথাল পাথাল হয়েছে সমাজে, কত ঘটনার ঘনঘটা— কিন্তু প্রতিবাদ মুছে যায়নি। এমনই অব্যবস্থার শিকার তেলেগু সাহিত্যের বর্ষীয়ান কবি ও সমাজকর্মী ভারাভারা রাও। এরই মধ্যে শরীরের অবস্থাও খারাপ হয়েছে তাঁর। সম্প্রতি স্পেশ্যাল কোর্টের তরফ থেকে ভারাভারা রাওয়ের শরীরের যত্ন নেওয়া ও নিয়মিত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশও এসেছে।

ছোট্ট করে একটু পুরনো ঘটনা মনে করা যাক। দুই বছর আগে, ২০১৮-এর জানুয়ারি মাসে ভীম কোরেগাঁও গ্রামে পালিত হচ্ছিল বিশেষ অনুষ্ঠান। দলিত আন্দোলনের শতবর্ষ পূর্তির সেই অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসভারও আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেখানেই বাঁধল গণ্ডগোল। সেই গণ্ডগোল থেকে শুরু হল জাতিগত দাঙ্গা। মারা গেল এক যুবক। পুলিশ তদন্তে নামলে সেই দলিত উদ্যোক্তাদেরই দায়ী করা হয়। প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেফতার হন বেশ কিছু সমাজকর্মী, বুদ্ধিজীবী। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন ৮১ বছরের কবি ভারাভারা রাও। জেলে যাওয়ার ঘটনা তাঁর কাছে নতুন নয়। সত্যি কথা বলার ‘অপরাধে’ আগেও জেলে গেছেন তিনি। কিন্তু এবার যেন একপ্রকার অবজ্ঞা করেই রাখা হয় তাঁদের। মুক্তির প্রসঙ্গ আনাই হয় না। দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম বন্দিদশায় কাটানো এক কবি… 

গোটা দেশ জুড়েই প্রতিবাদ উঠেছিল। এখনও চলছে সেই ঢেউ। আমাদের পশ্চিমবঙ্গের কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরাও সেই প্রতিবাদে গলা মিলিয়েছিলেন, পাশে এসেছিলেন। ভারাভারা রাওয়ের মুক্তির দাবিতে চলেছিল সই সংগ্রহ অভিযান। কিন্তু ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্র সেই আওয়াজ গ্রাহ্য করেনি। ‘শাসক মুক্তাঞ্চল বরদাস্ত করে না’। তাই ভারাভারা রাও আজও কারাগারের অন্ধকারে… 

এরই মধ্যে তাঁর শরীরের অবনতি হয়েছে। সেজন্য পুলিশি হস্তক্ষেপে মুম্বইয়ের টালোজা জেল থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জেজে হাসপাতালে। এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। এরই মধ্যে স্পেশ্যাল লকডাউন কোর্ট নির্দেশ দিল, তাঁর শরীরের অবস্থার আপডেট যেন প্রতিনিয়ত আদালতকে জানানো হয়। শুধু আদালত নয়, ভারাভারা রাওয়ের পরিবারকেও যেন সেই খবর জানানো হয়। যত শীঘ্র সম্ভব তাঁকে ভিডিও কনফারেন্সে নিয়ে আসার নির্দেশও দেওয়া হয়। 

Powered by Froala Editor

More From Author See More