রাজ্য সরকার নয়, তৃতীয় লিঙ্গের বোর্ডের প্রতিনিধি বেছে নেবে রূপান্তরকামীরাই, জোরালো হচ্ছে দাবি

তাঁরা আমাদের সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমাদের প্রতিবেশী, বন্ধু, সহকর্মী, সর্বোপরি সহ-নাগরিক। কিন্তু, আজও সমাজের একটা বড় অংশ তাঁদের ‘নগণ্য’ই মনে করে। অবহেলায় রেখে দেয়। তাঁরা, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, এই ডিসেম্বরেই রাজ্যে নতুন করে আবার তৃতীয় লিঙ্গের বোর্ড গঠন হবে। যেখানে নতুন কাউকে বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন করা হবে।

এরই সমান্তরালে তৃতীয় লিঙ্গের একটা বড় অংশের মধ্যে অন্য একটি আন্দোলন গলা তুলছে। সেটার উপলক্ষ্য এই রাজ্য ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডই। ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম গঠিত হয় এই বোর্ড। তখন ভাইস চেয়ারপার্সন হয়েছিলেন মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই নির্বাচনের ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের বাকি মানুষদের কোনও ভূমিকাই ছিল না। কোনরকম নির্বাচন হয়নি। এই বছরে, নতুন বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে এটাই তাঁদের মূল দাবি। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়েই যখন উন্নয়ন হবে, তাঁদের সুবিধা অসুবিধাগুলোর খবর রাখা হবে— তাহলে প্রতিনিধি বাছার অধিকারও তাঁদেরই দেওয়া হোক। এমনটাই দাবি জানাচ্ছেন ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির একটি অংশ।

এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সুজি ভৌমিক। তাঁর কথায়, ‘গত বছরগুলোতে যেভাবে বাছা হয়েছিল, এবার সেটার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। এটাই আমাদের মূল দাবি। এর আগে বোর্ডে কারা থাকছে, সেটা আমরা শুরুতে কেউই জানতাম না। ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির উন্নয়নের স্বার্থেই যখন উন্নয়ন বোর্ড, তাহলে সেই ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটিই ঠিক করবে তাঁদের উন্নয়নের জন্য কে থাকবে, কাদের প্রয়োজন। এটা তো তাঁদের অধিকার। দেশবাসীরা যেমন মন্ত্রীদের নির্বাচন করে, তাহলে আমরাও তো সেটা করতে পারি। যদি এই দাবি না মানা হয়, তাহলে আরও বড় আন্দোলনে নামা হবে।’

তবে এর পাশাপাশি আরও একটা বিষয়ও উঠে আসছে। রাজ্য সরকারের যতগুলো বিশেষ কমিশন আছে (যেমন মহিলা কমিশন, শিশু সুরক্ষা কমিশন), সেখানে নির্বাচিত সরকার তাঁর মনোনীত ব্যক্তিদের রাখবেন, এমনটাই দেখে এসেছি আমরা। এই আন্দোলন, এই দাবি রাজ্য সরকার কতটা গ্রহণ করবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।