পরিত্যক্ত জলের ট্যাঙ্কই হয়ে উঠল বাড়ি, আশ্চর্য ঘটনা ব্রিটেনে

পরিত্যক্ত কারখানা, কেবিন কিংবা ট্রাফিক কিউবিকলকে বদলে ফেলা হয়েছে স্থায়ী বাসস্থান বা এয়ারবিএনবিতে— এমন দৃশ্য দেখা গেছে বহুবার। কিন্তু জলের ট্যাঙ্কে মানুষের বাস? হ্যাঁ, এবার এমনই আশ্চর্য ঘটনা দেখা গেল ইংল্যান্ডের ক্লোভারলি ক্রসের (Cloverely Cross) কান্ট্রিসাইডে। নেপথ্যে এক ব্রিটিশ ব্যক্তি, রবার্ট হান্ট (Robert Hunt)।

বছর চারেক আগের কথা। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস। ক্লোভারলি স্টেটের একটি পরিস্রাবণ শিল্পের কারখানায় কাজ করতেন হান্ট। সে-সময়ই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি। বিক্রি করা হবে প্রকাণ্ড একটি পরিত্যক্ত সিমেন্টের ট্যাঙ্ক। যা কিনা একটা সময় ব্যবহৃত হত জল ও অন্যান্য রাসায়নিক সংরক্ষণের জন্য। চলতি শতকের গোড়াতেই তৈরি করা হয়েছিল অত্যাধুনিক প্ল্যান্ট। অন্যদিকে বাতিলের তালিকায় নাম লেখায় সংশ্লিষ্ট ট্যাঙ্কটি। সম্পত্তিটির দাম ধার্য করা হয় দেড় লাখ পাউন্ড। অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় দেড় কোটি টাকা। 

আমাদের কাছে এই মূল্য আকাশছোঁয়া মনে হলেও, ব্রিটেনের বাজারে তা খুব একটা বেশি নয়। পাশাপাশি ট্যাঙ্ক-সংলগ্ন জমির পরিমাণও কম নয় মোটেই। যে-কোনো ব্রিটিশ শহরে সমপরিমাণ জমির দাম প্রায় তিনগুণ। অথচ, এমন পরিত্যক্ত রিয়েল এস্টেট কেনার আগ্রহ দেখায়নি অন্যকোনো সংস্থা। এই সুযোগটাকেই ব্যবহার করেন হান্ট। নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে কিনে ফেলেছিলেন প্রকাণ্ড ট্যাঙ্কটিকে। তারপর শুরু হয়েছিল তাকে ‘বাড়ি’-র চেহারা দেওয়ার প্রকল্প। 

আজ তাকে দেখলে ট্যাঙ্ক বলে চিহ্নিত করাই দুষ্কর যে-কোনো মানুষের কাছে। ট্যাঙ্কের মূল জলধারণ করার অংশটিকে হান্ট পরিণত করেছেন বিলাসবহুল সুইটে। অন্যদিকে নিচের অংশ অর্থাৎ, আগে যে স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল আস্ত ট্যাঙ্কটি— সেটির চারিদিকে দেওয়াল তুলে বানিয়ে ফেলেছেন স্টোররুম এবং গ্যারাজ। সবমিলিয়ে ট্যাঙ্কটিকে নতুন চেহারা দিতে খরচ হয়েছে আরও ৬ লক্ষ পাউন্ড। তবে এই বাড়ি যে স্থাপত্য ও উদ্ভাবনীর এক আশ্চর্য নিদর্শন— তাতে সন্দেহ নেই কোনো। ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের কাছে ল্যান্ডমার্ক হয়ে উঠেছে ব্রিটেনের এই কানট্রিসাইডের ‘ট্যাঙ্ক-হাউস’…

Powered by Froala Editor