বেহুলার এই চায়ের দোকানে রোজ হাজির হন মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি, বঙ্কিমচন্দ্ররা

হুগলির একটি ছোট্ট স্টেশন বেহুলা। লখিন্দরের ভেলা এখানে এসে ভিড়েছিল কিনা, জানা যায় না। স্টেশনের একদম কাছেই রয়েছে একটি চায়ের দোকান। রয়েছেন বিপদ মণ্ডল। চায়ের সরঞ্জাম, সার সার বয়ামে রাখা বিস্কুট-মিষ্টি নিয়ে খদ্দেরের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে সারা দিন-রাত। কিন্তু দোকানে ঢুকলেই, হতবম্ব হবেন খানিক। ছোট্ট দোকানে হাজির হয়েছেন মহাত্মা গান্ধী, ভগত সিং, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল। সশরীরে নয়, ছবিতে। ছোট্ট দোকানের দেওয়াল ভরে উঠেছে মনীষীদের ছবিতে।

চায়ের কাপে তুফান তোলা বাঙালি বরাবরের মনীষী-প্রেমী। ক্লাবঘর হোক, বা বাসস্থান— সব জায়গায় বিরাজ করেন তাঁরা। কিন্তু নিজেদের ঘরগুলোয় তাঁদের সংখ্যা বোধহয় কমেছে। কমেছে তাঁদের নিয়ে আলোচনাও। শুধু পরীক্ষার রচনার পাতাতেই আটকে আছেন তাঁরা। বিপদ মণ্ডল এতেই সমূহ ‘বিপদ’ দেখছেন। চায়ের দোকান থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন উত্তম-সৌমিত্র, হারিয়ে যাচ্ছেন কপিলদেব, গাভাসকার। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা তো আছেনই। অথচ এদের অবদানের কথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই।

বিপদ মণ্ডল তাই ছবির মাধ্যমেই তুলে ধরতে চেয়েছেন এদের কথা। তাঁর ছোট্ট চায়ের দোকানে তাই হাজির হন মাইকেল মধুসূদন থেকে নজরুল, ইন্দিরা গান্ধী-সহ অনেকেই। এমনকি, রয়েছেন শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানও। রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবাইকে নিয়ে যাকে বলে, ভরা সংসার বেহুলা স্টেশনের এই বিপদ দা’র। এদের সবার কথা পৌঁছে দেওয়াই যে তাঁর কাজ!

ছবি ঋণ - exclusiveadhirath.com