ঝড়ের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত তাজমহল, ভেঙে পড়ল মার্বেল ও রেলিং

কয়েকদিনের তাপপ্রবাহের পর অবশেষে বৃষ্টির মুখ দেখছে উত্তর ভারত। বৃষ্টির সঙ্গেই বজ্রপাত এবং ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের থেকেও অধিক গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া। মানুষ খানিকটা স্বস্তির মুখ দেখলেও এর ফলেই ক্ষতির সম্মুখীন হল আগ্রার তাজমহল। ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে তাজমহলের ছাদের মার্বেল এবং বেলেপাথর নির্মিত রেলিং। আকস্মিক দুর্ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্থা এএসআই-এর আধিকারিকরা।

সূত্রের খবর, তাজমহল ভবনের মেরামতির জন্য লোহার ভারা বাঁধা হয়েছিল দেওয়ালের গায়ে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে কাজ শুরু করা যায়নি। হঠাৎ ঝড়ের দাপটে সেই অস্থায়ী ভারা ভেঙে পড়ে রেলিং-এর ওপর। আর এর ফলেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় মোট ২১ ফুট রেলিং। এর মধ্যে ৯ ফুট রাজস্থানি মার্বেলের তৈরি এবং তার দুপাশে ছিল ৬ ফুট লম্বা দুটি লাল-বেলেপাথরের রেলিং। এই মূল্যবান পাথর এবং তার ঐতিহ্যশালী নক্সা পুনরুদ্ধার করা তাই এখন সংরক্ষণকারী কর্মীদের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ।

শুধুই ছাদের রেলিং নয়, ঘণ্টায় ১২৪ কিলোমিটার ঝড়ের দাপটে তাজমহল চত্বরের অনেক অংশই বিপর্যস্ত। প্রায় এক ডজন গাছ মাটি থেকে সমূলে উৎপাটিত হয়েছে। এছাড়াও তাজমহলের পশ্চিম দিকের ফটক হেলে পড়েছে ঝড়ের ধাক্কায়। ফটকের সঙ্গে সংযুক্ত মেটাল ডিটেক্টর যন্ত্রটিও উল্টে পড়েছে। তবে এইসব ক্ষতিই খুব সাধারণ। একমাত্র রেলিং মেরামতির জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম এবং খরচের প্রয়োজন। এএসআই-এর তরফ থেকে আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা খরচের সম্ভবনা জানানো হয়েছে।

বছর দুয়েক আগেও ঝড়ের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তাজমহল। ২০১৮ সালে পরপর দুবার ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মূল ফটক এবং শাহী মসজিদ চত্বর। কিন্তু এবারের ক্ষতি যথেষ্ট মারাত্মক। যদিও কেন্দ্রের তরফ থেকে অর্থ বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি পেয়ে আধিকারিকরা জানিয়েছেন লকডাউন উঠলেই মেরামতির কাজ শুরু হবে। রাজস্থান থেকে নিয়ে আসা হবে মার্বেল এবং লাল-বেলেপাথর। সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে একমাসের মতো সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন আগ্রা বিভাগের মুখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক বসন্ত কুমার স্বর্ণকার। তবে আগামী দিনে দেশের ঐতিহাসিক সৌধগুলির নিরাপত্তার বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও সজাগ হতে হবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। আপাতত অপূরণীয় ক্ষতি কিছু ঘটেনি। কিন্তু সমস্ত ইতিহাস তো এভাবে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। তাই সেগুলির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ আবশ্যক।

Powered by Froala Editor