রুশ-ন্যাটোর পারমাণবিক যুদ্ধে প্রাণ হারাতে পারেন ৫৫ কোটি মানুষ

কয়েকদিন আগেই রাশিয়ায় নিউক্লিয়ার ড্রিলের আদেশ দিয়েছিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকেই ক্রমশ বাড়ছে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা। সম্প্রতি, ন্যাটো ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দিয়ে সাহায্য করার কথা ঘোষণা করার পরেই, পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের কথায়, রাশিয়ার অস্তিত্ব সংকটে পড়লেই ব্যবহৃত হবে পারমাণবিক অস্ত্র। কী পরিণতি হতে পারে এই পারমাণবিক সংঘাতের (Nuclear War)? এবার সেই পূর্বাভাসই দিল এআই সিম্যুলেশন (AI Simulation)। আর সেই পূর্বাভাস রীতিমতো গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতোই। 

কৃত্রিম বুদ্ধামত্তার এই সিম্যুলেশনের পূর্বাভাস (Prediction) অনুযায়ী, রাশিয়া ও ন্যাটোর সদস্য দেশগুলির মধ্যে নিউক্লিয়ার ওয়ার বা পারমাণবিক যুদ্ধ হলে গোটা বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারাবেন ৫৪.৮ কোটি মানুষ। এবং সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু কতটা নির্ভরযোগ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-প্রসূত এই পূর্বাভাস? 

মূলত, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা, জাতিসংঘ, সিআইএ, এমআই৬-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং হিরোশিমা-নাগাসাকির মতো পূর্বের পারমাণবিক বোমাবর্ষণের ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করেই নির্মিত হয়েছে এই পূর্বাভাস। মূলত, পারমাণবিক বোমার আঘাত পরবর্তী বিপর্যয়কে তিনটি পর্যায়ে ভেঙেছে এই সিম্যুলেশন— নিউক্লিয়ার ওয়ার, নিউক্লিয়ার ফলআউট এবং নিউক্লিয়ার উইন্টার। 

প্রথম পর্যায় অর্থাৎ বোমা বর্ষণের মুহূর্তেই প্রাণ হারাতে পারেন প্রায় ১৭.৮ কোটি মানুষ। যার মধ্যে রয়েছে ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির ৮৬ কোটি মানুষ এবং ৯১ কোটি রুশ নাগরিক। দ্বিতীয় পর্যায় অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ফলআউটে মারা যেতে পারেন আরও ১৮.৬ কোটি মানুষ। পারমাণবিক বর্জ্য এবং তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়াই এর অন্যতম কারণ। এই ঘটনায় রাশিয়া এবং ইউরোপের সীমানা ছাড়িয়ে তেজস্ক্রিয়তা প্রভাব বিস্তার করতে পারে গোটা পৃথিবীতেই। যুদ্ধ শুরুর প্রায় ১০ মাস পর শুরু হবে ভয়াবহতার তৃতীয় পর্যায়— নিউক্লিয়ার উইন্টার। পারমাণবিক শীতের শেষে সবমিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ৫৪.৮৭ কোটি। 

সম্প্রতি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেডিট ব্যবহারকারী এই গোটা সিম্যুলেশনটির ফলাফল তুলে ধরেছেন। যদিও এই পূর্বাভাস অনেকটাই সরলীকৃত বলেই দাবি স্রষ্টার। তবে পরমাণু শক্তিধর দেশগুলি একে অপরের উপর ক্রমাগত আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ চালাতে থাকলে বাস্তব পরিস্থিতি এই সম্ভাবনার কাছাকাছিই পৌঁছাবে বলে ধারণা তাঁর। মূলত রুশ ও ন্যাটো দেশগুলির প্রশাসনের কাছে শান্তি ও নিরাপত্তার বার্তা পৌঁছে দিতেই তাঁর এই উদ্যোগ। এখন দেখার, এই ফলাফল থেকে পরমাণু শক্তিধর দেশগুলি সত্যিই শিক্ষা নেয় কিনা…

Powered by Froala Editor

More From Author See More