তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের ফলে কমেছে মৃত্যু, বেড়েছে ফসলের উৎপাদনও

জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে চিন্তিত গোটা পৃথিবী। আর বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সহ অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের অন্যতম উৎস মনে করা হয় কয়লভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে। গত কয়েক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক এক করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে জৈবগ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। আর তার ফলে রক্ষা পেয়েছে ২৬,০০০ জীবন। বেড়েছে ফসলের পরিমাণ। এমনই তথ্য উঠে এসেছে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায়।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে ধোঁয়া বাতাসে মেশে, তাতে থাকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, ওজোন গ্যাস এবং বিভিন্ন ধূলিকণা ও কার্বনকণা। এর ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্র পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ প্রায়সই ঘন ধোঁয়াশায় ঢাকা থাকে। মানুষ সহ জীবজগতের উপর ভয়াবহ প্রভাব পড়ে এই ধোঁয়াশার।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে প্রকৃতি-পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়ল, তা জানতেই এই গবেষণা।  ইপিএ এবং নাসা কর্তৃক গৃহীত তথ্যের ভিত্তিতেই গবেষণা করা হয়েছে। আর তাতেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে ২৬,৬১০ জন মানুষের জীবন বেঁচে গেছে। কয়েক বিলিয়ন গাছের উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে যে বায়ুদূষণ হয় তার ফলে মানুষের ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জৈবগ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ফলে হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের রোগে মৃত্যুর পরিমাণ কমেছে অনেকটাই। আধুনিক প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে, বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এছাড়াও, আনুষঙ্গিক আরও অনেক সুবিধা আছে বলেই দাবি করেছেন গবেষক জেনিফার বার্নে।

যদিও জৈবগ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎপ্রকল্পের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এমন নয়। সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে আরো গবেষণা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বার্নে। তবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে যে প্রকৃতি-পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটাই কমে গেছে, সেই তথ্যই উঠে এসেছে জেনিফার ও তাঁর সহকারীদের গবেষণায়।