ফিতে বাঁধার সমস্যার ইতি, অটিস্টিক শিশুদের জন্য বাজারে এল বিশেষ জুতো

ওরা বাকি শিশুদের থেকে একটু আলাদা। ছোটোবেলা থেকেই ওদের সমস্যা হয় সমাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। নানাকিছুর মতোই সমস্যা হয় জুতোর ফিতে বাঁধতেও। অথবা চপ্পলে পা গলাতে। অনেকসময় অভিভাবকরাও ঠিক বুঝতে পারেন না, সমস্যাটা কোথায়। অসহায় বাচ্চাদের অকারণেই বকাঝকা সহ্য করতে হয় মাঝে মাঝে। এখন অবশ্য অনেকেই সচেতন হচ্ছেন। তবে ‘অটিজম স্পেক্ট্রাম ডিজর্ডারে’র উপসর্গ যে বিচিত্র! আর শুধু রোগ বুঝতে পারলেই তো হল না, তার সঙ্গে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থাও তো করতে হবে। বকাঝকা না করে তাদের সমস্যার কথা মাথায় রেখেই সমাজের সঙ্গে মানিয়ে তোলার শিক্ষা দিতে হবে।

কিন্তু আজকের দিনে বাড়ির বাইরে খালি পায়ে তো আর হাঁটা সম্ভব নয়। অন্তত এই একটা বিষয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় আজও। আর সেখানেই সমাধান আনতে চলেছে ‘ব্যান্স’ কোম্পানি। বাজারে নিয়ে এল ৮টি বিশেষ ধরণের জুতো ও চপ্পলের মডেল। এগুলির ডিজাইন বানানো হয়েছে বিশেষভাবে অটিস্টিক শিশুদের কথা মাথায় রেখে।

স্নিকারগুলিতে আছে ‘হুক অ্যান্ড লুপ’ ক্লোজার দেওয়া স্ট্র্যাপ। ফলে জুতোর ফিতে বাঁধার ঝামেলা আর সহ্য করতে হবে না। এমনকি প্রতিটা জুতো শব্দ ও স্পর্শের মাধ্যমে চেনার উপযোগী। প্রতিটার রংও ঠিক করা হয়েছে শিশুদের উপযুক্ত করে। সমাজের ‘স্বাভাবিক’ চলনের থেকে যারা একটু আলাদা, তাদেরও তো অধিকার আছে নিজেদের প্রকাশ করার। আর সেই কারণেই ‘ফ্যাশন’ জগতেও প্রয়োজন বৈচিত্র্য আনা।

১৯৯৬ সাল থেকেই ‘ব্যান্স’ কোম্পানি উদ্যোগ নিয়েছে মানুষের বিচিত্র অভিব্যক্তিকে সমর্থন জানাতে। এমনটাই জানাচ্ছেন কোম্পানির আধিকারিকরা। সমস্ত বয়সের সমস্ত মানুষের উপযুক্ত জুতোর সম্ভার বাজারে আনতে সচেষ্ট তাঁরা। আর তাঁদের এই বিশেষ উদ্যোগের সুবিধা পেতে চলেছে অটিস্টিক শিশুরা। পৃথিবীর নানা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

‘ব্যান্স’ কোম্পানির সঙ্গে এই উদ্যোগে সামিল হয়েছে ‘এ.স্কেট ফাউন্ডেশন’। সমাজের সঙ্গে অটিস্টিক শিশুদের সামঞ্জস্য ফেরাতে নানারকম উদ্যোগ নিয়ে থাকে এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি। আর ‘ব্যান্স’ কোম্পানি তাদের হাতে তুলে দিয়েছে ১ লক্ষ ডলারের জুতো। সমাজের মূলস্রোতের বাইরে থাকা এইসব শিশুদের কাছে নিঃসন্দেহে প্রয়োজনীয় এই জুতো। এখন এই উদ্যোগ শিশুদের কাছে কতটা পৌঁছতে পারে, সেটাই দেখার।