শকুন্তলা এক্সপ্রেস – ভারতের একমাত্র ‘প্রাইভেট’ ট্রেন

দুষ্মন্ত-শকুন্তলার কাহিনী পড়েনি, এমন ভারতীয় বোধহয় কমই আছে। কালিদাস হোক বা রাজা রবি বর্মা— অনেকেই শকুন্তলাকে দেখেছেন নিজেদের মতো করে। কিন্তু মহারাষ্ট্রের আচালপুরের গ্রামবাসীরা শকুন্তলাকে চেনে অন্যভাবে। এই শকুন্তলা তাদের বেঁচে থাকার লাইফলাইন। তবে, এটি কোনও রক্তমাংসের মানুষ নয়। এটি একটি ট্রেন। বলা ভালো, ভারতের একমাত্র ‘প্রাইভেট’ ট্রেন। শকুন্তলা এক্সপ্রেস।  

খানিক গোলমেলে লাগল না? লোকাল, এক্সপ্রেস— সব মিলিয়ে ভারতের বুকে যে-কটি ট্রেন চলে, তার সবগুলোই ভারতীয় রেলের অধীনে থাকে। তবে এই ট্রেনটাকে প্রাইভেট বলা হচ্ছে কেন? উত্তর মেলে না। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে এই ‘শকুন্তলা এক্সপ্রেস’ ভারতীয় রেলের জাতীয়করণের সময় তালিকায় ছিল না। ফলে, ব্যাতিক্রম হয়েই রয়ে গেল ট্রেনটি। তবে গুরুত্ব কোনও অংশে কম হয়নি। ১৯১০ সালে প্রথম ব্রিটিশ ভারতে এই শকুন্তলা এক্সপ্রেসটির সূচনা হয়। মহারাষ্ট্রের আচালপুর থেকে ইয়াভাটমল— প্রায় ১৯০ কিমি পর্যন্ত এর গতিবিধি। দিনে মোটে দু’বার যাতায়াত করে এটি। গতিও খুব বেশি থাকে না। তা সত্ত্বেও এই ট্রেনটিই সেই অঞ্চলগুলোর গ্রামবাসীদের কাছে আশীর্বাদস্বরূপ।

বর্তমানে গ্রেট ইন্ডিয়ান পেনিনসুলার রেলওয়ের তত্ত্বাবধানে শকুন্তলা এক্সপ্রেস চালানো হয়। এখনও রেললাইনের ধারে ব্রিটিশ আমলের কিছু কিছু পুরনো লিভার দেখতে পাওয়া যায়। ভারতের মধ্যেই, অথচ খানিক তফাতেই দিন গোনে শকুন্তলা এক্সপ্রেস। একদিন দুষ্মন্তের জন্য যেমনভাবে দিন কাটিয়েছিল পুরাণের শকুন্তলা।

ছবি ঋণ - wahgazab.com