নরমাংসের স্বাদ কেমন? জানাচ্ছেন রাশিয়ার ‘মানুষখেকো’

বিশ শতকের একদম শেষের দিক সেটা। গোটা বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল রাশিয়ার হাড় হিম করা এক ঘটনা। শুধু হত্যাই নয়, মৃত ব্যক্তির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে নরমাংস খেয়েছিলেন খুন। পাশাপাশি সেই মাংস বিক্রি করেছিলেন খোলা বাজারে। ভ্লাদিমির নিকোলায়েভিচ নিকোলায়েভ। অবশ্য ৬৩ বছর বয়সি এই খুনি পরিচিত ‘ভ্লাদিমির দ্য ক্যানিবাল’ (Vladimir The Cannibal) নামে। এবার মানুষের মাংসের স্বাদ কেমন, তা নিয়ে মুখ খুললেন কারাবন্দি অপরাধী।

১৯৯৭ সালের কথা। দুই ব্যক্তিকে হত্যা এবং নরমাংস খাওয়ার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন ভ্লাদিমির। মৃত্যুদণ্ডের নিদান দিয়েছিল রাশিয়ার আদালত। তবে ১৯৯৯ সালে রাশিয়া মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি বাতিল করার পর, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় ভ্লাদিমিরকে। ২০০১ সালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় সে-দেশের কঠিনতম কারাগার কে-৬ ব্ল্যাক ডলফিনে। কাজাখস্তানের সীমান্তে অবস্থিত এই কারাগারে রাখা হয় দেশের সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধীদের। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত খাওয়া ও স্নান ছাড়া বিশ্রাম করার অনুমতিও থাকে না তাঁদের।

এই কঠিনতম কারাগারের যাপনচিত্র নিয়েই একটি বিশেষ ডকুমেন্টারি তৈরি করছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি। সেই তথ্যচিত্রের জন্যই সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল ভ্লাদিমিরের। ক্যামেরার সামনে এই প্রথম নিজের খুনের সম্পূর্ণ ঘটনা উল্লেখ করলেন তিনি। 

ভ্লাদিমির জানাচ্ছেন, আদতে খুন করার কোনো ইচ্ছাই ছিল না তাঁর। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার এক ব্যক্তির সঙ্গে ঝগড়া হয় তাঁর। সুস্থ অবস্থায় ছিলেন না সেই ব্যক্তিও। কথা কাটাকাটি থেকেই হাতাহাতি। সেখান থেকেই অপর ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যু। সাক্ষী নিশ্চিহ্ন করতে আরও একজনকে হত্যা করেছিলেন ভ্লাদিমির। তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁদের দেহ নিয়ে এসেছিলেন নিজের ফ্ল্যাটে। টুকরো টুকরো করে সেগুলি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তবে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাঁর মনে হয়, মানুষের মাংসের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ এটাই। 

হ্যাঁ, ঊরুর কাছ থেকে বেশ খানিকটা মাংস কেটে প্রথম সিদ্ধ করেছিলেন ভ্লাদিমির। তারপর স্টেকের ছলে সেটি ফ্রাই করে খান তিনি। তাছাড়াও, মানুষের মাংসের মোমো তৈরি করে স্ত্রী ও সন্তানকেও খাইয়েছিলেন ভ্লাদিমির। তাঁদের বলেছিলেন এই মাংস ক্যাঙ্গারুর। একইভাবে ক্যাঙ্গারুর মাংসের নাম করেই, তিনি এই মাংস বিক্রি করেন খোলা বাজারে।

কিন্তু রাশিয়ায় ক্যাঙ্গারু! ভ্লাদিমিরের কথা শুনে সন্দেহ জেগেছিল এক রুশ মহিলার মনে। মাংস কিনে, তা ডাক্তারের কাছে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই সামনে আসে গোটা রহস্যটা। খবর যায় পুলিশের কাছেও। তারপরই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ‘ভ্লাদিমির দ্য ক্যানিবাল’। এরপর পেরিয়ে গেছে প্রায় আড়াই দশক। বছর চারেক আগে নরভক্ষণের জন্য গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আরও এক রাশিয়ান দম্পতি। সে যাই হোক, নর-মাংসের মোমো, কিমা-সহ একাধিক পদ চেখে দেখার সুযোগ পেয়েছেন ভ্লাদিমির। তবে তাঁর মতে, মানুষের ফ্রাই-ই সেরা। সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন রাশিয়ার নরখাদক খুনি…

Powered by Froala Editor

Latest News See More