বাগানজুড়ে সাজানো নানা কাচের কেস। আর তার মধ্যে রাখা নানা ধরনের পাথর। মাটি খুঁড়ে যেসব পাথর পাওয়া যায়। তবে পৃথিবী গঠনের রহস্য যাঁরা জানতে চান, তাঁদের কাছে এই এক একটি পাথর একেবারেই অকিঞ্চিতকর নয়। ভারতের বুকে এই প্রথম সর্বসাধারণের জন্য তৈরি হল পাথরের সংগ্রহশালা অর্থাৎ রক মিউজিয়াম (Rock Museum)। বৃহস্পতিবার হায়াদ্রাবাদ (Hyderabad) শহরে এই সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দর সিং। এই সংগ্রহশালা যে স্কুলপড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকের মধ্যেই ভূতত্ত্ব সম্পর্কে আগ্রহ অনেকটা বাড়িয়ে দেবে, সেই বিষয়েও আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
হায়াদ্রাবাদ শহরে ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রাঙ্গনে উদ্বোধন হল অভিনব এই সংগ্রহশালার। সিএসআইআর পরিচালিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনজিআরআই। মোট ৪৬টি পাথরের নমুনা নিয়ে পথচলা শুরু করল এই মিউজিয়াম। আর প্রতিটা পাথরই সংগ্রহ করা হয়েছে ভারতের নানা অঞ্চল থেকে। কোনোটা কাশ্মির থেকে, কোনোটা ওড়িশা। কোনোটা আবার পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান বা মণিপুর থেকে।
এদের বয়সও আলাদা আলাদা। সবচেয়ে পুরনো পাথরটির বয়স প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন বছর। আর সবচেয়ে নতুন পাথরটির বয়স ৫০ মিলিয়ন বছর। কোনো কোনো পাথর আবার পাওয়া গিয়েছে মাটি থেকে ১৭৫ মিটার নিচে। প্রতিটা কাচের কেসের সঙ্গে রাখা নির্দিষ্ট বোর্ডে পাথরগুলি সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য লিখে রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে। ফলে কোন পাথরের মধ্যে কী কী খনিজ রয়েছে বা কীভাবে এইসব পাথরের জন্ম হয়েছে, সেইসমস্ত তথ্যও জানতে পারবেন দর্শকরা।
এই বছর দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। পাশাপাশি সিএসআইআর-এর ৮০ বছর পূর্তিও এই বছর। এমন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে সিএসআইআর-এর কাজের পরিসর আরও বৃদ্ধি করার কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী। আর এক্ষেত্রে ভূতত্ত্বের গবেষণায় নতুন করে জোর দেওয়ার প্রস্তাবও রেখেছেন। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার সিএসআইআর-এর পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়েছে লখনৌ এবং দেরাদুন শহরের ভূমিকম্প মানচিত্র। শহরের কোন অংশ কতটা ভূমিকম্পপ্রবণ সেই তথ্যের পাশাপাশি কোথায় কী ধরনের নির্মাণ সম্ভব, তাও বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা রয়েছে এই মানচিত্রে। দুই রাজ্যের বিপর্জয় মোকাবিলা বিভাগের হাতে এইদিন সেই মানচিত্র তুলে দেওয়া হয়। আগামীদিনে ভূতত্ত্ব গবেষণার পীঠস্থান হয়ে উঠতে পারে হায়াদ্রাবাদের এই সংগ্রহশালা, এমনটাই আশা করেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে।
আরও পড়ুন
বিশ্বের প্রথম মোবাইল মিউজিয়াম, দেখা যাবে ফোনের বিবর্তনের ইতিহাস
Powered by Froala Editor