কলকাতার বুকে স্টার্টআপ কার্নিভ্যাল, প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল ন্যাসকম

“বাংলায় বরাবরই বুদ্ধিমত্তা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কদর অনেক বেশি। প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও তার তেমন রদবদল হয় না। এই মুহূর্তে কলকাতায় বেশ কিছু বহুজাতিক সংস্থা নিজেদের কাজের বিস্তৃতি ঘটাতে শুরু করেছে। তাই ন্যাসকম-এর সদস্য হিসেবে আমরা মনে করি, বাংলায় সফটওয়্যার স্টার্টআপ, বিনিয়োগকারী, নব্য ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, বিশ্লেষক প্রমুখদের বাংলার প্রতি উৎসাহী করার এটাই সঠিক সময়।”

বলছিলেন ‘ন্যাসকম’-এর পূর্ব আঞ্চলিক পরিষদ-এর চেয়ারম্যান সঞ্জয় চ্যাটার্জি। অলাভজনক সংস্থা ‘ন্যাসকম’ (NASSCOM)— ‘ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিস কোম্পানিস’-এর উদ্যোগে কলকাতার বুকে আয়োজিত হতে চলেছে প্রযুক্তি ও বাণিজ্যের এক মহোৎসব। ‘বেস্ট’ (BEST)— বেঙ্গল এন্টারপ্রেনিয়স সামিট অন টেকনোলজি (Bengal Entrepreneurs Summit on Technology)। আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতার স্মার্ট কানেক্টে বসতে চলেছে এই বাণিজ্যিক আসর। আর মাত্র এক সপ্তাহের অপেক্ষা। তার মধ্যেই আজ প্রকাশ পেল ন্যাসকমের এই ‘স্টার্টকাপ কার্নিভাল’-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি। 

শুধু ন্যাসকমই নয়, এই উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, বিভিন্ন বহুজাতিক পণ্য ও পরিষেবা সংস্থা, সিআইও, সিএমও, সিটিও। হাজির হবেন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের ছোটো-বড়ো উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক; দেশের অন্যান্য প্রান্তের শিক্ষাবিদ, বিনিয়োগপতি, ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব, নন-টেক প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে রয়েছে প্রাইভেট ইক্যুইটি, সিড ফান্ডস, ইনকিউবেটর নিয়ে কাজ করা একাধিক সংস্থা। লক্ষ্য, বাংলার তথা ভারতের বুকে স্টার্টআপ-বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলা। 

মহামারীর আবহে বড়োসড়ো ধাক্কা খেয়েছিল গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। তবে সেই প্রতিকূলতার সামনেও হার মানেনি বাংলা এবং দেশের স্টার্টআপগুলি। হ্যাঁ, পরিকল্পিত লাভের পরিধি না পেরলেও, দেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠেছিল এইসকল ছোটো ছোটো উদ্যোগ। চিকিৎসাক্ষেত্র থেকে শুরু করে লজিস্টিক্স কিংবা সফটওয়্যার— প্রযুক্তির দুনিয়ায় একের পর এক আশ্চর্য উদ্ভাবনী উপহার দিয়েছে দেশের তরুণ উদ্যোগপতিরা। ধরে রেখেছে দেশের অর্থনীতিকে। 

এইসব তরুণ উদ্যোগপতিদের সাফল্যের উদযাপন এই ‘বেস্ট’। আগামীদিনে তাঁদের উদ্ভাবনী এবং কার্যকলাপ যাতে প্রসারিত হয় জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক স্তরে— তার জন্যই ‘বেস্ট’-এর মঞ্চ গড়ে তুলেছে ন্যাসকম। যেখানে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারী, গ্রাহক এবং সর্বোপরি বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন দেশের নব্য-ব্যবসায়ী তথা স্টার্টআপরা। বদলে যাওয়া বাজারেও সঙ্গে মানিয়ে নিতে গেলে কী কী পদক্ষেপ প্রয়োজন— সে-ব্যাপারেও পরামর্শ পাবেন বিশেষজ্ঞদের থেকে।

আশির দশক থেকেই দেশের বিভিন্নপ্রান্তের ছোটো-বড়ো সংস্থাকে এক ছাতার তলায় আনতেই লড়াই শুরু করেছিল ‘ন্যাসকম’। সবমিলিয়ে দেশের ৩ হাজারেরও বেশি প্রযুক্তি সংস্থা আজ এই সংগঠনের অংশ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আইটি বিপিএম-এর ক্ষেত্রে ন্যাসকম-এর সদস্য সংস্থাদের মোট বার্ষিক আয় ২২৭ বিলিয়ন ডলার। বলার অপেক্ষা থাকে না, দেশের মোট আয় বা জিডিপির একটা বড়ো অংশের নেপথ্যে রয়েছে এই সংগঠন। এবার ‘ন্যাসকম’ সাম্প্রতিকতম উদ্যোগ আরও সুদূরপ্রসারী করে তুলবে ভারতের স্টার্টআপ বাস্তুতন্ত্রকে। সমন্বয় ঘটাবে বাংলা, অন্যান্য রাজ্য এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাদের মধ্যে। প্রাচীন কাল থেকেই ভারতের বাণিজ্য, উদ্যোগ এবং ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাংলা। সবমিলিয়ে বলতে গেলে, বাংলার সেই গৌরবকেই আবার ফিরে আসতে চলেছে স্টার্টআপ কার্নিভাল ‘বেস্ট’-এর হাত ধরে। আজ তারই ইঙ্গিত পাওয়া গেল ন্যাসকমের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে… 

Powered by Froala Editor