'নিষিদ্ধ' দুনিয়ার বাইরেও সাফল্য খুঁজেছেন যেসব পর্ন তারকা

/১২

জনপ্রিয়তাই কোনো অংশেই কম যান না তাঁরা। তবু ‘নিষিদ্ধ’-এর তকমা সেঁটে রয়েছে তাঁদের গায়ে। অবমাননার শিকার হওয়াও নিত্যদিনের ঘটনা তাঁদের কাছে। হ্যাঁ, তাঁরা সকলেই পর্ন তারকা। তবে শুধু নীল ছবিই নয়, তার বাইরে ব্যক্তিগত জীবনেও স্বতন্ত্র তারকা। সে-খবর আমরা আদৌ কি রাখি? তাঁদের মধ্যে এখনও কেউ হয়তো টিকে রয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে, কেউ আবার বিদায় নিয়েছেন। জেনে নেওয়া যাক এমনই কিছু পর্ন তারকাদের অজানা গল্প…

/১২

সানি লিওন— একটা সময়ে নীল ছবির পর্দায় ঝড় তুলেছিলেন তিনি। ছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশনও। তারপর পর্ন দুনিয়াকে বিদায় জানিয়েই সানি ঢুকে পড়েছিলেন বলিউডে। রয়েছে সুগন্ধী এবং প্রসাধনীর ব্যবসাও। কিন্তু এর বাইরে অনালোচিত থেকে গেছে তাঁর চরিত্রের একটি মানবিক দিক। বছর দুয়েক আগে দরিদ্র শিশুদের জন্য মুম্বাইয়ে একটি আর্ট স্কুল স্থাপন করেন সানি। শুধু তাই নয়, তাঁর প্রথম সন্তানটিও কিন্তু দত্তক নেওয়া একটি অনাথ আশ্রম থেকে।

/১২

ড্যানি ড্যানিয়েল— ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নতুন করে পরিচিত করানোর দরকার নেই এই নামটির সঙ্গে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে পর্নের জগতে তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। যদিও তাঁর আসল নাম কিরা লি। মেধাবী শিক্ষার্থী হয়েও স্রেফ দারিদ্র্যের জন্যই পর্ন দুনিয়াকে বেছে নিতে হয়েছিল তাঁকে। তবে তাঁর বাস্তব জীবন অবাক করার মতোই। পর্দার জগতের বাইরে খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী ড্যানি। তাঁর আঁকা ছবি প্রদর্শিত হয় বিভিন্ন প্রথম সারির গ্যালারিতে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছেন ড্যানি। কোভিডের সময়েও কয়েক লক্ষ ডলারের অনুদান নিয়ে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দরিদ্রদের।

/১২

মিয়া খালিফা— পর্নের দুনিয়ায় খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছালেও, বিতর্ক পিছু ছাড়েনি তাঁর। নীল ছবিতে হিজাব পরার জন্য রীতিমতো প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত এসেছিল তাঁর কাছে। কিছুদিন আগেই নীল ছবিকে বিদায় জানিয়েছেন মিয়া। তবে শেষ হয়ে যায়নি কেরিয়ার। আমেরিকার পেশাদার বাস্কেটবল খেলোয়াড় গিলবার্ট অ্যারিনেসের সঙ্গে জুটি বেঁধে মিয়া এখন স্পোর্টস টক শো-এর সঞ্চালক। খেলার প্রতি তাঁর শৈশবের আগ্রহকেই যেন নতুন করে আবিষ্কার করতে চলেছেন তিনি। সেইসঙ্গে জড়িয়েছেন চ্যারিটিতেও। চলতি বছরেই দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত দুই শিশুর চিকিৎসার জন্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার মার্কিন ডলারের অনুদানের বন্দোবস্ত করেন মিয়া।

/১২

জনি কিইস— পর্নের জগৎ থেকে তিনি বিদায় নিয়েছেন বহুদিন। বলতে গেলে তিনিই ছিলেন বিশ্বের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পর্ন তারকা। স্কুলজীবনে চ্যাম্পিয়ন বক্সার হওয়া সত্ত্বেও দারিদ্র তাঁকে টেনে এনেছিল অ্যাডাল্ট ফিল্মের জগতে। পরে সেনাবাহিনীতেও যোগ দেন তিনি। অবসরের পর নাট্যাভিনয় এবং সঙ্গীতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন জনি। বর্তমানে তিনি কান শহরের কালচারাল আইকন। হ্যাঁ, হামেশাই জ্যাজ সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে তাঁকে দেখা যায় স্টেজে। সিয়াটেলে রয়েছে তাঁর একটি আস্ত বাস্কেটবল অ্যাকাডেমিও।

/১২

লিসা অ্যান— নৃত্যশিল্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল কিশোর বয়স থেকেই। নাচের জগতে পেনসিলভেনিয়ার কিশোরীর জনপ্রিয়তাও কম ছিল না। ১৫ বছর বয়সে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সারা পালিনের প্রচার-প্যারোডিতেও নাচতে দেখা গিয়েছিল লিসাকে। কিন্তু সেই একই দারিদ্র্যের গল্প। অর্থের জন্য প্রথাগত নাচ ছেড়ে স্ট্রিপারের ভূমিকায় নামতে হয় তাঁকে। সেখান থেকে পর্ন। বর্তমানে স্পোর্টস রেডিও শো ‘সিরিয়াস এক্সএম’-এ কণ্ঠ দেন লিসা।

/১২

ট্যাবিথা স্টিভেন— প্রথম জীবনে লিসার মতো ট্যাবিথাও ছিলেন নৃত্যশিল্পী। তিনিও পর্ন দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ করেন স্ট্রিপিং-এর সূত্র ধরেই। তবে পর্ন ছাড়ার পর সম্পূর্ণ এক ভিন্ন জীবনযাপনের অভ্যস্ত ট্যাবিথা। আমেরিকার ইউটা প্রদেশে স্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে আস্ত একটি ফাইন-আর্ট গ্যালারি চালান তিনি। সেইসঙ্গে নিজেও চুটিয়ে ফটোগ্রাফি করেন ট্যাবিথা।

/১২

ব্রিটনি অ্যানড্রুস— ব্রিটনির গল্পটা একটু অন্য। লিসা কিংবা ড্যানিদের মতো অর্থাভাবে পর্নে আসেননি ব্রিটনি। বরং, পর্ন তারকা হওয়াই ছিল তাঁর স্বপ্ন। পরবর্তীতে নিজের পৃথক পর্ন প্রোডাকশন হাউসও তৈরি করেন তিনি। সেইসঙ্গেই চলত দেশ-বিদেশের পত্রিকায় মডেলিং। তবে সেখানেই আটকে থাকেননি তিনি। শিখেছেন ডিস্কো জকির কাজও। বর্তমানে ‘স্কাম আর্টিস্ট’ নামে একটি ডিজে এজেন্সির মালিক ব্রিটনি। গোটা বিশ্বজুড়েই নানান জায়গায় ডিজে-র শো করেও বেড়ান তিনি।

/১২

ড্যারেন জেমস— অল্প বয়সেই হারিয়েছিলেন বাবা-মাকে। ছিল না মাথ গোঁজার ঠাঁইটুকুও। বলতে গেলে তাঁকে ডেট্রয়েটের রাস্তা থেকেই তুলে এনেছিলেন এক পর্নফিল্মের প্রোডিউসার। নীল ছবিতে তাঁর অভিষেক হয়েছিল কৈশোরকালেই। পর্নজগৎ তাঁকে দু’হাত ভরে অর্থ দিলেও, এই পর্নের জন্যই এইচআইভি-তে আক্রন্ত হন ড্যারেন। তবে হতাশায় ডুবে যাননি তিনি। বরং, এই রোগের বিরুদ্ধেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দরিদ্র এইডস আক্রান্তদের চিকিৎসার খরচ বহন করে চলেছেন ড্যারেন। সেইসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছেন মোটিভেশনাল স্পিকারের ভূমিকাতেও।

১০/১২

ক্যাসি লেইন— কয়েক বছর আগের কথা। নীল ছবিতে সর্বোচ্চ বেতনের তারকা হয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন ক্যাসি। তারপরেই হঠাৎ হারিয়ে যান তিনি ইন্ডাস্ট্রি থেকে। কিন্তু কারণ কী? এখানেও ঘুরে ফিরে আসবে দারিদ্র্যের গল্পি। মেধাবী শিক্ষার্থী এবং নৃত্যশিল্পী ছিলেন ক্যাসি। কিন্তু উচ্চশিক্ষায় ভর্তি হওয়ার মতো সামর্থ্যটুকুও ছিল না তাঁর। পর্নকে বেছে নেওয়া সেই থেকেই। উপার্জনের পর ফের পুরনো জীবনেই ফিরে যান ক্যাসি। ভর্তি হন আমেরিকার একটি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে।

১১/১২

জেট সেটিং জ্যাসমিন— পর্নের দুনিয়া বাইরে থেকে সৌখিন লাগলেও, সুন্দর নয় কাছ থেকে। বিগত উদাহরণগুলি থেকে ভালোমতোই বোঝা গেছে সেটা। শুধু অর্থের জন্য ক্যামেরার সামনে শরীর ‘বিক্রি’ করা খুব একটা সহজ কাজ নয় মোটেই। সেইসঙ্গে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় হামেশাই। তেমনটাই হতে হয়েছিল জেট জ্যাসমিনকেও। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তরুণ পর্ন তারকাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন জ্যাসমিন। বর্তমানে পর্ন তারকার পাশাপাশি তিনি একজন থেরাপিস্ট। সেইসঙ্গে সেক্স এডুকেটরও। সেক্স সম্পর্কে সমাজের প্রচলিত ট্যাবু ভেঙে ফেলাই এখন প্রধান লক্ষ্য তাঁর।

১২/১২

সাশা গ্রে— টিনেজ পর্ন তারকা হিসাবেই নীলছবির দুনিয়ায় অভিষেক হয়েছিল তাঁর। বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছিলেন সাশা। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই পর্ন কেরিয়ারে ইতি টানেন তিনি। সেটা ২০১১ সালের কথা। ফেসবুকে প্রকাশ্যে অবসরের কথা ঘোষণা করেন তিনি। জানান, এবার থেকে তাঁর পরিচয় একজন ‘আর্টিস্ট’। হ্যাঁ, সাশার ব্যক্তিগত জীবন রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতোই। পর্নের বাইরে অভিনয়, সঙ্গীত এবং সাহিত্য— তিনটি ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জন করেছেন সাশা। শুনলে চমকে উঠবেন, টম ক্রুসের মিশন ইম্পোসিবল ৪-এর ‘ফল আউট’ গানটির কণ্ঠশিল্পী তিনিই। তাঁর গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স দেখা গিয়েছিল গার্ডিয়ান অফ দ্য গ্যালাক্সি ছবিতেও। বর্তমানে দাম্পত্য সম্পর্ক, প্রেম নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মোটিভেশনাল স্ট্রিমিং-ও করেন তিনি। সেইসঙ্গেই চলছে দ্বিতীয় উপন্যাস লেখার কাজ।

Powered by Froala Editor

More From Author See More