করোনার পর এবার হান্টা ভাইরাসের আক্রমণ, মৃত ১, বাড়ছে আতঙ্কও

একটার পর একটা দিন কেটে যাচ্ছে, বিজ্ঞানীরা এখনও খুঁজে চলেছেন করোনা ভাইরাসের ওষুধ কিংবা প্রতিষেধক। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৪ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। মৃতের সংখ্যাও ১৬ হাজারের বেশি। তাই স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মানুষের মধ্যে। আর এর মধ্যেই যদি অন্য কোনো ভাইরাসের সংক্রমণের খবর আসে, তাহলে তো কথাই নেই। এমন ঘটনাই ঘটল হঠাৎ। শোনা গেল, চিনের ইয়ুনান প্রদেশে এক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন হান্টা ভাইরাসে। আর পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মারাও গিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন
সেরে উঠেছেন লক্ষাধিক মানুষ, করোনা-আক্রমণের বিপরীতে আশার আলো

এখনও অবধি যদিও হান্টা ভাইরাসের শিকার একজনই, এবং কোনো সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে এমন খবর স্বভাবতই চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন নেটিজেনরা। ফেসবুক, ট্যুইটার ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়ে গিয়েছে দুশ্চিন্তা। করোনার উৎসও চিনে। তাই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার আরও একটি 'কারণ' পাওয়া গেল।

আরও পড়ুন
৯০ বছর আগেই খোঁজ মিলেছিল করোনার, প্রথম আক্রমণ ১৯৬৫ সালে

অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর মধ্যে দুশ্চিন্তার তেমন কোনো কারণ নেই। যদিও এটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর একটি প্রাণঘাতী ভাইরাস, কিন্তু এর চিকিৎসা আছে। তাছাড়া মানুষের মধ্যে সচরাচর এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যায়না। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মূলত ইঁদুর গোত্রের প্রাণীর মধ্যেই এই রোগে সংক্রমণ ঘটে। তবে ইঁদুরের মল, মূত্র বা লালা থেকে মানুষের শরীরেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। কিন্তু পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেই সম্ভবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন
করোনা থেকে বাঁচতে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন, কিন্তু সকলের জন্য এক্ষুনি নয়

তবে ইতিহাস বলছে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নতুন নয়। ১৯৯৩ সালে আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিমের অ্যারিজোনা, নিউ মেক্সিকো, কলোরাডো এবং উটাহ প্রদেশে এই ভাইরাস রীতিমতো মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটিয়েছিল। এমনকি ভারতেও আগে এই ভাইরাসের সংক্রমণের রেকর্ড আছে। ২০০৮ সালে তামিলনাড়ুতে ২৮ জন মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে মুম্বইতে একটি ১২ বছরের ছেলে মারা যায় হান্টা ভাইরাসের সংক্রমণে। এর উপসর্গও অনেকটা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মতোই। ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এই ভাইরাস। সঙ্গে জ্বর, মাথা ধরা, পিঠে ও তলপেটে ব্যথাও দেখা যায়।

আরও পড়ুন
শাঁখ, উলুধ্বনি, বাজিতে উত্তাল গোটা দেশ, করোনার সঙ্গে দীর্ঘযুদ্ধের প্রস্তুতি?

তবে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আপাতত একজন মাত্র মানুষের মধ্যেই এই সংক্রমণের ঘটনা জানা গিয়েছে। বাসে তাঁর সহযাত্রী যারা ছিলেন, সেই ৩২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে কিনা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তবে মানুষের শরীর থেকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হয় বলে জানা নেই বিশেষজ্ঞদের। আপাতত করোনার ভয়াবহতাই পৃথিবীকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এর মধ্যে নতুন ভাইরাসের সন্ধান আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে ঠিকই, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন করোনা আটকাতেই। একদিকে তো এর উপযুক্ত কোনো চিকিৎসা নেই, অন্যদিকে সংক্রমণের সম্ভবনাও প্রচুর। তাই বিভিন্ন দেশেই শুরু হয়ে গিয়েছে জরুরি অবস্থা। এমন সময় নিজের স্নায়ু ধরে রাখুন। অযথা উত্তেজিত হবেন না।