চালু হবে একাধিক নতুন রুট, দূষণ রোধে ট্রামেই ভরসা প্রশাসনের

কলকাতার নিজস্বতা বলতে যেভাবে উঠে আসে হাওড়া ব্রিজ, ময়দান, ভিক্টোরিয়ার নাম, ঠিক সেভাবেই কলকাতার সঙ্গে সমার্থক হয়ে গেছে ট্রাম। ১৮৭৩ সালে কলকাতার বুকে প্রথম চলেছিল ঘোড়ায় টানা ট্রামগাড়ি। ১৯০০ সালে আসে বিদ্যুৎচালিত ট্রাম। কলকাতার এই দেড় শৎকের ঐতিহ্যের ‘প্রতীক’ ট্রামই মুছে যেতে চলেছিল গত কয়েক বছরে। তবে দূষণ কমাতে ট্রামের যে বিকল্প হয় না, সেই কথা মাথায় রেখেই প্রশাসন বাড়াতে চলেছে ট্রাম রুটের সংখ্যা।

ডব্লুবিটিসি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর রজনবীর সিং কপুর রবিবার ঘোষণা করেন, কলকাতায় বাড়ানো হবে ট্রামের রুট। যাত্রীদের চাপ কমানোর পাশাপাশিই কার্বন নির্গমণকে কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে ভয়ঙ্করভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রামের লাইন এবং ওভারহেডের তার। কর্মীরা রাতদিন এক করেই এখন মেরামতির কাজ করছে। ইতিমধ্যেই সচল হয়েছে কলকাতার ছ’টির মধ্যে চারটি ট্রামরুট। একটি চালু হয়ে যাবে সামনের সপ্তাহেই। আরেকটি সারাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে।

বায়ুদূষণ এবং বায়ুর গুণমান নিয়ন্ত্রণ সাম্প্রতিক সময়ে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতার কাছে। পরিসংখ্যান বলছে যানবাহন-দূষণের এক তৃতীয়াংশেরই কারণ বাস পরিষেবা। ডিজেল চালিত যান এড়াতেই তাই ইলেকট্রিক বাস চালু করেছিল প্রশাসন। বর্তমানে যা র সংখ্যা ৮০। আরও ৫০টি ইলেকট্রিক বাস চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে কলকাতার। পাশাপাশিই ট্রামরুটের আধিক্য অনেকটাই কমিয়ে আনবে বাসের চাহিদা। এমনটাই মনে করছে প্রশাসন। কমবে দূষণও।

২০১১ সালে কলকাতায় মোট ৩৭টি ট্রাম রুট ছিল। কিন্তু বিভিন্ন নির্মাণ কাজের কারণে অধিকাংশ রুটই পরিত্যক্ত। সংখ্যাটা এখন এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬-এ। গত এক দশকে অস্বাভাবিকভাবেই কমেছে ট্রামের সংখ্যাও। রক্ষণাবেক্ষণেও যে ঠিকঠাক নজর দিচ্ছে না ডব্লুবিটিসি, সেই অভিযোগও তুলেছিলেন ট্রামকর্মীরা। দূষণের যাঁতাকলেই শেষ অবধি ফিরতে চলেছে ট্রামের ভাগ্য...

আরও পড়ুন
পড়ুয়াদের জন্য শহরে বিশেষ ট্রাম, আগামী সপ্তাহেই নামছে পথে

Powered by Froala Editor