একপ্রকার বাধ্য হয়েই ২০১৯-এ ঘর ছেড়েছেন প্রায় ৮ কোটি মানুষ, জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জ

মানবাধিকার। পৃথিবীর নানা জায়গায় নানা সময় এই কথাটি জোরালো হয়ে উঠে এসেছে। এখন আমেরিকা জুড়ে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে, সেটারও মূল দাবি মানবাধিকারের। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ ভেদে আমরা সবাই মানুষ; আর তাই সবারই অধিকার আছে মানুষ হিসেবে বাঁচার। কিন্তু সেটা হচ্ছে কি? বিশ্ব শরণার্থী দিবসের প্রাক্কালে এই প্রশ্নটাই তুলে দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাঁদের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৯ সালে প্রায় ৮ কোটি মানুষকে নিজের বাসস্থান ছেড়ে বাধ্য হয়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছে। অর্থাৎ বাধ্য হয়েই তাঁদের রিফিউজি করা হয়েছে…

বিগত কয়েক বছর ধরে পৃথিবী অনেক যুদ্ধ, অশান্তি দেখেছে। রাষ্ট্রের লড়াই, সন্ত্রাসের লড়াইয়ের মাঝে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন সাধারণ মানুষ। ফলে বেড়েছে শরণার্থী সমস্যা, যা গোটা বিশ্বের অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ। নানা জায়গায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের প্রাথমিক চাহিদাটুকুও পায়নি এরা। ২০১৯ জুড়ে গোটা বিশ্বে উঠে এসেছে এমনই ৮ কোটি মানুষ। এদের মধ্যে প্রায় ২.৬ কোটি শরণার্থী; যাদের কোনো দেশ নেই এখন। প্রায় সাড়ে চার কোটির মতো মানুষ নিজের দেশেই পরবাসীর মতো বেঁচে আছে। সমস্ত জায়গা-জমি ছেড়ে চলে গেছে দেশের অন্য প্রান্তে। সিরিয়া থেকে রোহিঙ্গা— পৃথিবী জুড়ে এমনই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সমীক্ষা আরও বলছে, বিগত বছরগুলির থেকে ২০১৯-এ এই সমস্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি তথ্য দেখা যায়, তবে প্রতি বছর নতুন করে বেড়েছে শরণার্থীদের সংখ্যা। আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তাঁদের মধ্যে ৪০ শতাংশই হল শিশু। যাদের একটা স্বপ্ন ছিল, পৃথিবীর বুকে নতুন করে বেঁচে ওঠার আশা ছিল, তাদের শৈশব একপ্রকার স্তব্ধ হয়ে গেল। সৈকতে মুখ উল্টে পড়ে থাকা শিশুটার মতো এই ৮ কোটি মানুষও অন্ধকারে পড়ে আছেন। এই সূত্রে আমরা মনে করতেই পারি ভারতের সাম্প্রতিক এনআরসি পরিস্থিতিকে। যেখানে কয়েক লাখ মানুষকে নিজের দেশেই ‘বিদেশী’ তকমা দেওয়া হয়েছে, রাখা হয়েছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। এই মানুষগুলোও তো ৮ কোটির অংশ! করোনা ভাইরাসের এমন পরিস্থিতিতে এরা কেমন ভাবে টিকে আছে, কেউ জানে না! 

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
দারিদ্র্য আর অনাহারে জর্জরিত ভেনেজুয়েলা, চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর