ঘর হারিয়েছে পাখিরাও, আমফানের পর ছন্নছাড়া উড়ে বেড়াচ্ছে শহরজুড়ে

আমফান চলে গেছে বেশ কয়েকদিন হল। এখনও অনেক জায়গা ছন্দে ফিরতে পারেনি। কলকাতা তো বটেই, দক্ষিণবঙ্গের অনেক জায়গাতেই ক্ষতির চিহ্ন এখনও রয়ে গেছে। কত মানুষ এখনও ঘরছাড়া, সাজানো সংসার, রোজগার মুহূর্তে মিলিয়ে গেছে। শুধু কি মানুষ? চারিদিকে তাকালেই দেখতে পাব পাখিদের। দিশাহারা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। আমফানের পর এভাবেই বাস্তুহারা হয়ে গেছে পাখির দল।

গোটা কলকাতা জুড়েই নিজের ধ্বংসলীলা চালিয়ে গেছে আমফান। উপড়ে গেছে একের পর এক গাছ। ভেঙে গেছে বিদ্যুতের খুঁটিও। সব মিলিয়ে ছত্রাকার অবস্থা। রাস্তার ওপর ভাঙা গাছ সরাতে গিয়ে অনেকেরই নজরে পড়েছে বিভিন্ন পাখির মৃতদেহ। কখনও মাটির ওপর পড়ে আছে সদ্য জন্মানো ছানা। এখানে ওখানে পড়ে রয়েছে পাখির বাসা। এভাবেই বাসা হারিয়েছে শহরের পক্ষীকুল। চড়াই, শালিক, টুনটুনি, পেঁচার মতো পাখিরা উদ্ভ্রান্ত হয়ে আছে। কী করবে, বুঝে উঠতে পারছে না কিছুই। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু কলকাতা শহরেই ১৫ হাজারের বেশি গাছ পড়ে গেছে। একা রবীন্দ্র সরোবরে ভেঙেছে ২০০টি গাছ। আর সেখানেই বিপদে পড়েছে পাখিরা। মারা তো গেছেই অনেকে, বাকিরা বাসা হারিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই ব্যাপারটাই চিন্তায় ফেলেছে পরিবেশপ্রেমী ও পক্ষীবিশারদদের। এমনিতেই এই সময়টা অনেক পাখির বাসা বাঁধার সময়। আমফান এসে সেই বংশবিস্তারে আঘাত হেনেছে। অন্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়তে ভরসা পাচ্ছে না তারা। ফলস্বরূপ, প্রবল সংকটের মুখে শহরের পাখিরা। এছাড়াও পরিযায়ী পাখিদেরও আনাগোনা কমে গেছে এই ঝড়ের ফলে। ভেঙে পড়া গাছগুলোর জায়গায় নতুন গাছ পোঁতার পরিকল্পনা যদিও করা হয়েছে। কিন্তু সেই গাছগুলোর বড়ো হতে তো সময় লাগবে। ততদিন পাখিরা কোথায় যাবে? এমনিই ‘উন্নয়নের ঠেলায়’ তাদের অস্তিত্ব সংকটে। আমফান এসে সেই সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়ে গেল। 

Powered by Froala Editor