স্কুল খোলা, তবে বইপত্র নিয়ে যেতে হবে না ছাত্রছাত্রীদের

ছোটবেলার স্কুল দিনগুলোর ছবি বলতেই মনে পড়ে নতুন বন্ধু, ব্ল্যাকবোর্ড, গেটের বাইরে ঝালমুড়ি অথবা বন্ধুদের সঙ্গে ইয়ার্কি খুনসুটির দিনগুলো। এবং অবধারিতভাবে সেইসব দিনগুলিতে হোমওয়ার্ক বাদ দিলে একমাত্র শত্রু ছিল বোধহয় অসম্ভব ভারী স্কুলের ব্যাগগুলো। স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের কাছে নিতান্তই কাঁধে বইবার অযোগ্য ছিল বলে সেগুলো কখনও কখনও বইতে হত বাবা-মাকেই। সেই ছবি এখনো বদলায়নি তো বটেই, বরং দিনে কালে আরও দুর্বিষহ হয়েছে স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের এই স্কুল ব্যাগ বইবার পরিণতি। অসম্ভব ভারী এই ব্যয় বইতে বইতে কম বয়সেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাদের।

স্কুলের বাচ্চাদের এই অভিজ্ঞতা থেকে মুক্তি দিতেই এবার নতুন পথ খুঁজল মণিপুর সরকার। এবার থেকে মণিপুরে শনিবার করে স্কুলের ব্যাগ বইতে হবে না ছাত্র-ছাত্রীদেরকে। কারণ সেই দিন স্কুল হলেও, প্রয়োজন হবে না কোনও বই-খাতার। শুধুমাত্র সরকারি স্কুল নয়, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত আধা সরকারি স্কুল এবং প্রাইভেট স্কুলগুলিতেও প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি অবধি প্রত্যেক শনিবার হবে 'নো স্কুল ব্যাগ ডে'!

কিন্তু স্কুল ব্যাগ বা বইপত্র ছাড়া স্কুলে পড়াশোনা হবে কী করে? সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, সেদিন থাকবে হাতে কলমে শিক্ষার পাঠ। খেলাধুলা, হাতের কাজ বা অন্যান্য এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এইসব দিনে, যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের সুকুমারবৃত্তিগুলিও প্রকাশ পায় সুচারুভাবে।

শিক্ষা দপ্তরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহও। বলেছেন, এর ফলে শিশুরা স্কুলে আসতে চাইবে আরো বেশি করে, নতুন ভাবে ভালোবাসতে শিখবে শুধু স্কুল নয়, সামগ্রিক শিক্ষাদান পদ্ধতিটিকেই, এমনই আশা করা যায়। আশা তো রাখতে পারি আমরাও, ক্রমাগত এই ইঁদুর দৌড়ের টানাপোড়েন থেকে সপ্তাহে অন্তত একটা দিন হলেও মুক্তি দিতে পারব আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। বাকি দেশ এখন মণিপুরের রাস্তায় হাঁটতে চায় কিনা, সেটাই এখন দেখার।