ঝাড়খণ্ড অব্দি পৌঁছেছে পঙ্গপাল, ধেয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গের দিকে?

একদিকে করোনা ভাইরাস এবং তার মধ্যেই আমফানের আক্রমণ, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা এখন একেবারেই বিপর্যস্ত। এর মধ্যে কি আরও এক উৎপাত হানা দিতে চলেছে রাজ্যে? আমফানের তাণ্ডবে উপকূল অঞ্চলের কয়েক হাজার একর কৃষিজমি লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলির ফসল কি নিরাপদ? চিন্তায় বাংলার কৃষকরা, এমনকি পরিবেশবিদরাও। কারণ আর কিছুই না, রাজস্থান থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশ, বিহার পেরিয়ে পঙ্গপালের দল এখন ঝাড়খণ্ডে। অতএব পরবর্তী লক্ষ্য যে পশ্চিমবঙ্গ, সেটা সহজেই অনুমান করা যায়।

যেকোনো কৃষকের কাছে সবচেয়ে বড় বিভীষিকা হয়তো এই পঙ্গপাল নামক পতঙ্গটি। এরা দল বেঁধে হানা দেয়। আর একটি দলে থাকে লক্ষাধিক পতঙ্গ। দেখতে দেখতে এরা ফসলঘেরা মাঠ একেবারে ছিবড়ে করে ফেলে। অবশ্য ১৯৬১ সালের পর পশ্চিমবঙ্গের স্মৃতিতে আর এমন ঘটনা ঘটেনি। তাই আগন্তুক পতঙ্গদের ঠেকাতে চিন্তিত প্রশাসনও। আর গতমাসে আফ্রিকার পশ্চিমে হানা দেওয়া এই নতুন প্রজাতির পঙ্গপাল আগের থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। একমাসের মধ্যেই আফ্রিকা পেরিয়ে বেলুচিস্তান হয়ে এই বাহিনী ঢুকে পড়েছে ভারতবর্ষে। রাজস্থান এবং উত্তর ভারতের কৃষিজমির অবস্থা তাই শোচনীয়। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা অবশ্য রাজস্থানেরই।

ভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড়ের মিলিত তাণ্ডবে বিপর্যস্ত বাংলার অর্থনীতি। সামাজিক অবস্থাও এমন দুর্বল যে পতঙ্গ রুখতে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা মুশকিল। স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের কপালে। অন্যদিকে পতঙ্গ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একেকটি পঙ্গপাল ১০০ সন্তানের জন্ম দেয়। তাই একশ থেকে হাজার এবং তারপর লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে খুবই কম সময় লাগে। আর একবার চাষের জমি ঘিরে ফেললে তাদের প্রতিরোধ করা মুশকিল। উপায় শুধু প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক এবং অ্যানাস্থেটিক ওষুধ স্প্রে করা। তবে এতে ফসলেরও যথেষ্ট ক্ষতি হয়। তাই প্রথমেই রাসায়নিক ব্যবস্থা না নিয়ে যান্ত্রিক পদ্ধতির উপরেই আস্থা রাখতে চাইছেন বিশেষজ্ঞরা।

Powered by Froala Editor