২০৩০-এর মধ্যেই অরণ্যনিধন শূন্যে, 'অসম্মত' ভারত!

বিগত ২ দিনের আলোচনার পর আজ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিন। কপ-২৬ সম্মেলনের প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হল আজ। সারা পৃথিবীর মোট ১০৫টি দেশ সেই চুক্তিতে সই করেছে। আর চুক্তি অনুযায়ী আগামী এক দশকের মধ্যে অরণ্যনিধনের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। শুধু তাই নয়, এই লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হলে এতদিন ধরে বনভূমির যে ক্ষয় ঘটেছে, সেই জায়গায় নতুন বনসৃজনও করা হবে। এর মধ্যে ব্রাজিল, রাশিয়া, কানাডা, কেনিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলি চুক্তিতে সই করলেও অদ্ভুতভাবে দূরে সরে রয়েছে ভারত। ভারতের এই আচরণে রীতিমতো অবাক সকলেই।

পরিবেশ সুরক্ষার প্রশ্নে সবার আগে প্রয়োজন বনভূমিকে বাঁচিয়ে রাখা। কারণ একমাত্র ঘন অরণ্য অঞ্চলই সমস্ত ধরনের দূষণ প্রতিরোধ করতে পারে। ফলে কপ-২৬ সম্মেলনের এই চুক্তিকে স্বাগত জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মী ও বিশেষজ্ঞদের সকলেই। কিন্তু একইসঙ্গে থেকে যাচ্ছে কিছু আশঙ্কাও। ২০১৪ সালে প্রথমবার অরণ্যনিধন রোধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে একটি রাজনৈতিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়। তাতে বিশ্বের ৪০টি দেশ ২০২০ সালের মধ্যে অরণ্যনিধন ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় অরণ্যনিধন হ্রাস তো পায়নি, বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের চুক্তি যেন আর কেবল লিখিত স্তরে না থাকে, বরং তার বাস্তবায়ন ঘটুক। এটাই চান পরিবেশকর্মীরা।


২০১৪ সালের চুক্তিতে ব্রাজিল এবং রাশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলি স্বাক্ষর করেনি। তবে এবারে এই দুটি দেশও অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে যদিও ব্রাজিলের আমাজন অরণ্যের ৪০ শতাংশই প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। বাকি ৬০ শতাংশ অরণ্যও সংকটজনক অবস্থায় রয়েছে। আমাজনকে বাঁচাতে ১৪ বিলিয়ন ইউরোর একটি তহবিল গঠনের পরিকল্পনাও নেওয়া হল আজকের আলোচনায়। পাশাপাশি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম বৃষ্টি অরণ্য কঙ্গোকে বাঁচাতেও ১ বিলিয়ন ইউরোর একটি তহবিল গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থাও। ফলে সব মিলিয়ে আজকের চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলেই মনে করছেন কপ-২৬ সম্মেলনের আয়োজন তথা ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে কেনিয়া, কাজাকিস্তান, পাকিস্তান, লাটাভিয়ার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলিও যেখানে পরিবেশ রক্ষার জন্য চুক্তিতে সম্মতি জানিয়েছে, সেখানে ভারতের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই।

Powered by Froala Editor