সংকটের দিনগুলিতে একজোট পুরোহিত ও ইমামরা, খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন দুঃস্থদের কাছে

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে দেশজুড়ে চলছে লকডাউন। জমায়েত থেকে ছড়াতে পারে সংক্রমণ। তাই জমায়েত এড়াতে সাধারণের জন্য বন্ধ রয়েছে দেশের ধর্মস্থানগুলি। তবে বন্ধ থাকলেও, থেমে নেই কর্মযজ্ঞ। মানুষের জন্যই ধর্ম। তাই সাধারণ মানুষের সাহায্যেই ব্রতী হয়েছে ধর্মস্থলগুলি। বেলুড়-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের রামকৃষ্ণ মিশনগুলিকে দেখা গেছে গরিব এবং দুঃস্থদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে। মুম্বাই এবং আরো বেশ কয়েকটি জায়গায় মসজিদগুলিকে উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে, অভুক্তদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করতে। এবার বাংলার এক ঘটনা মন ভালো করে দিল সকলের।

বেলগাছিয়া বস্তিতে করোনা রাজ্যের করোনাভাইরাস হটস্পটগুলির মধ্যে একটি। কঠিন লকডাউনের মধ্যে দিয়েই দিন কাটছে বেলগাছিয়ায়। তবে লকডাউনের নিয়ম মেনেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন আঞ্চলিক মন্দিরের পুরোহিত এবং মসজিদের ইমামরা। একই সঙ্গে। খাবার তুলে দিচ্ছেন দরিদ্রদের হাতে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এসিপি, ওসি সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা।

এলাকার যুবকদের সঙ্গে নিয়েই এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন ওই পুরোহিত এবং ইমামরা। তবে খোলা হয়নি মন্দির, মসজিদ। স্পষ্টতই তালা ঝুলছে গেটে। রান্না করে বাড়ি বাড়ি খাবার দিয়ে আসছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। রাস্তার অভুক্তদের কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে খাবার। মসজিদ থেকে মাইকে সকলকে বাড়িতে থাকতে অনুরোধও করা হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ এক যেন প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত।

এলাকায় অনেকের কাছেই নেই মাস্ক। তাই এদিন মাস্কও বিতরণ করলেন পুলিশের আধিকারিকরা। ডিসি ইএসডি, অজয় প্রসাদ জানান, অঞ্চলের সাধারণ মানুষ মেনে চলছেন লকডাউন। সহজ করে দিচ্ছেন তাঁদের কাজ। সঙ্গে এলাকার পিস কমিটি যে তাঁদের বিশেষভাবে সাহায্য করছে, সেকথাও জানান তিনি।

মসজিদের এক ইমাম এদিন বলেন, হিন্দু মুসলমান একে অপরের ভাই। এই পাশে পাশেই চলতে হবে আমাদের। এই সংকটের দিনে, ক্ষুধার নিরিখে হিন্দু কিং মুসলমানের জন্য নয়, মানুষের জন্যই এই চেষ্টা।

‘ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু’। সুমনের গানের মতোই, এই সম্প্রীতিই তো চেয়ে এসেছি আমরা। এই একতা থাকলেই একদিন না একদিন মেঘমুক্ত হবে এই দুর্দিনের আকাশ। খুব শীঘ্রই জয় আসবে। বেলগাছিয়ার সম্প্রীতি আমাদের সেই সুসময়ের স্বপ্নই দেখাচ্ছে…