বাড়ি নয়, কোয়ারেন্টাইন মেনে জঙ্গলেই থাকছেন বাংলার চার নির্মাণকর্মী

সারা দেশে চলছে লকডাউন। যুদ্ধ নয়, উপলক্ষ্য করোনার আক্রমণ। এমন অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ সমস্ত রাজ্যে জারি আছে লকডাউন। কোয়ারান্টাইনে আছেন অনেকে। কিন্তু সবাই তো ঘরবন্দি, মানে নিজের পরিবারের সঙ্গে আছে। কোয়ারান্টাইনেও তাই। কিন্তু একসঙ্গে থাকলে যদি আমার প্রিয়জনদেরও কিছু হয়? সেই চিন্তা থেকেই বাড়ি না গিয়ে জঙ্গলেই আলাদা থাকছেন চারজন নির্মাণকর্মী!

সম্প্রতি মালদার গাজোলের জঙ্গলে এমনই দৃশ্য দেখা গেল। সেই সঙ্গে তৈরি হল সচেতনতার অন্য এক দৃষ্টান্ত। ওই চার নির্মাণ কর্মীই গাজোলের বাসিন্দা। কল্যাণীর এইমসের কাজে যুক্ত ছিলেন জ্যোতির্ময় সমাদ্দার, কৃষ্ণ সমাদ্দার, অমল বিশ্বাস ও অসীম বিশ্বাসরা। সেই সময়ই শুরু হয়েছে করোনার উপদ্রব। পরপরই জারি হয়েছে লকডাউনও। মালদায় ফিরেই এই চারজন কর্মী চলে গেলেন হাসপাতালে। সেখান থেকে বলা হল ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে। ব্যাপারটা বোঝার পর একটু চিন্তাতেই পড়ে গেলেন তাঁরা। যদি ঘরে থাকেন, আর যদি করোনা এসেও থাকে শরীরে; সেটা তো পরিবারের মানুষগুলোর মধ্যেও ছড়াবে। তাঁরাও বিপদে পড়বেন। সেটা কী করে হয়? সেটা তো কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না!

তারপর থেকেই মালদার এই চারজন বনবাসী। ১৪ দিন গাজোলের জঙ্গল আর তাঁবুই তাঁদের ঠিকানা। অসুবিধা হচ্ছে একটু, কিন্তু প্রকৃতির মধ্যে থাকতেও দিব্য লাগছে তাঁদের। আমরা কথায় কথায় বলি, সোশ্যাল আইসোলেশন প্রয়োজন। এই মানুষগুলো এমন ‘দুরূহ’ শব্দের সঙ্গে পরিচিত নন। কিন্তু যেটা করছেন, সেটা তো একপ্রকার ‘আইসোলেশনই’। বলা ভালো, প্রকৃত আইসোলেশন। এর থেকেও আমরা একটু শিখব না? বনে নয়, বিপদ না কাটা অবধি ঘরেই না হয় থাকি আমরা। পরিবার, সমাজ সবাই মিলে ভালো থাকা যাবে!