সরকারের সমালোচনা করায় বিতাড়িত, বিদেশে উবের চালিয়ে রোজগার কিংবদন্তি ফুটবলারের

নব্বইয়ের দশক তো বটেই, এই শতাব্দীর শূন্য দশকেও তাঁর খেলা উপভোগ করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। তুরস্কের সর্বকালের সেরা গোলস্কোরারই শুধু নন, নিজের সময় পুরো ইউরোপের অন্যতম প্রধান স্ট্রাইকার ছিলেন তিনি। আর আজ? তুরস্কের কিংবদন্তি ফুটবলার হাকান সুকুর আমেরিকার রাস্তায় তিনি বই বিক্রি করছেন, উবের চালাচ্ছেন।

রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য হাকানকে তাঁর নিজের দেশ থেকেই উৎখাত করা হয়। শুধু তাই নয়, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ এরদোগান তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছেন। সঙ্গে তাঁর বাবাকেও জেলে ঢোকানো হয়। অথচ এই হাকানই টার্কির ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি নাম। ১৯৯২ থেকে ২০০৭— এই পুরো সময়টায় জাতীয় দলের হয়ে ১১২টি ম্যাচে ৫১টি গোল করেন।

২০০২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল টার্কির জন্য স্মরণীয় একটি বছর। সেবারই বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল এই দেশটি। আর সেই দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন হাকান সুকুর। শুধু কি দেশ? নিজের ফুটবল কেরিয়ারে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন গালাতাসারে ক্লাবে। টার্কির সুপার লিগের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলস্কোরার তিনি। এই ক্লাবের হয়ে জিতেছেন উয়েফা ইউরোপা লিগও। পেয়েছেন গোল্ডেন ফুট লেজেন্ড অ্যাওয়ার্ডও। এত বর্ণময় কেরিয়ার যার, দেশের হয়ে এত অবদান থাকা সত্ত্বেও তাঁকে ‘দেশদ্রোহী’ হতে হয়েছে। অপরাধ? সরকারের সমালোচনা করা।

আমেরিকায় বই বিক্রি করা এবং উবের চালানোর পাশাপাশি সান ফ্রান্সিসকোতে একটি রেস্তোরাঁও রয়েছে তাঁর। কিন্তু নিজের দেশেই তিনি আর ফিরতে পারবেন না। একপ্রকার বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। হাকানের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বিশ্বাসঘাতক নন, অপরাধীও নন— বারবার বলছেন এই কিংবদন্তি। তাহলে কেন এমন ব্যবহার?

দেশে শাসকের পাশাপাশি বিরোধী স্বরও থাকবে, সেটাই তো সুস্থ গণতন্ত্রের চিত্র। বিরোধী আওয়াজকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে, শোনা হবে, সেটাই তো কাম্য। কিন্তু সেটা কি করা হচ্ছে? পৃথিবীর নানা দেশে এই প্রশ্নটাই উঠছে বারবার। সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় ভারতেও এমন প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। প্রশ্ন যেমন সহজ, উত্তরও তো জানাই…