৯০ বছর বয়সে লড়াই থামল মধুবালার, হাতির মৃত্যুতে শোকের ছায়া জলদাপাড়ায়

শেষ হল দীর্ঘ লড়াই। প্রয়াত মধুবালা। রাজ্য বন দফতরের পোষ্য মহিলা হাতি। জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে একটানা পঞ্চাশ বছরের রাজত্ব ছিল তার। চোরা শিকার থেকে কাঠ চুরি, সমস্ত ক্ষেত্রেই বন দফতরকে ভরসা দিত এই বিশ্বস্ত প্রহরী। রবিবার তার মৃত্যু সংবাদ জানান বন দফতরের চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন রবিকান্ত সিনহা। মধুবালার মৃত্যুতে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বিহারের শোনপুরের পশুমেলা থেকে এই হস্তিনীকে কিনে এনেছিল রাজ্য বন দফতর। ১৯৬৯-৭০ নাগাদ জলদাপাড়ায় প্রথম পা রেখেছিল মধুবালা। অল্প সময়েই সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছিল সে। সেই সময় থেকেই একটানা বন দফতরের কাজ করেছে মধুবালা। নব্বই বছর বয়সী এই হাতি শেষ জীবনেও বেশ কর্মঠ ছিল বলেই জানায় আধিকারিকেরা।

কিছুদিন আগেই জলদাপাড়ায় মারা যায় বেশ কয়েকটি হাতি এবং গণ্ডার। অ্যানথ্রাক্সের আশঙ্কা করেছিলেন আধিকারিকেরা। প্রতিষেধকও দেওয়া হয় বেশ কিছু বন্যপ্রাণীকে। তবে এদিন আধিকারিকেরা নিশ্চিত করেন, তেমন কোনো রোগে মারা যায়নি মধুবালা। বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয় তার। সম্প্রতি সমস্ত দাঁতই পড়ে পড়ে গিয়েছিল মধুবালার। ফলে খাবার খেতে সমস্যা হচ্ছিল। কার্যত আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ছিল মধুবালা।

১৯৩০ সালে জন্ম মধুবালার। এই কুনকি হাতির রয়েছে আটটি সন্তান। বন দফতরের আধিকারিকেরা জানান, এই মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হল অভয়ারণ্যের। মধুবালার কাছে ঋণী বন দফতর। এই ঋণ অপরিশোধ্য। প্রয়াত এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে, এদিন বিশেষ সম্মান জানান ফরেস্ট অফিসাররা। উপস্থিত ছিলেন কর্মী থেকে ওয়ার্ডেন সবাই। জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের এই বিশ্বস্ত বন্ধুর মৃত্যুশোকে এখন বেশ থমথমে জলদাপাড়ার পরিবেশ।