রোগী দেখতে রোজ ১০ কিলোমিটার পাড়ি, ৮৭ বছরেও অক্লান্ত মহারাষ্ট্রের চিকিৎসক

সারা দেশ করোনা আতঙ্কে স্তব্ধ। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু এর মধ্যেও বিশ্রাম নেই ৮৭ বছরের ডাক্তার রামচন্দ্র দানেকরের। সেই ৬০ বছর আগে সাইকেলের প্যাডেলে পা রেখেছিলেন। আজও সেটাই সঙ্গী। খালি পায়েই সাইকেলে চড়ে প্রতিদিন রোগী দেখতে ছোটেন। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রায় কোনো উন্নতিই ঘটেনি এতদিন ধরে, সেখানেই নীরবে একক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

১৯৫৯ সালে হোমিওপ্যাথি বিষয়ে ডিগ্রি নিয়ে পাশ করেন মহারাষ্ট্রের রামচন্দ্র দানেকর। সেই থেকে মুল, পম্বুর্না, বালারশা তালুকাস সহ প্রায় ৫টি গ্রামের দরিদ্র অসহায় মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন তিনি নিজেই। রোগীরা হয়তো অনেকেই ওষুধের দাম পর্যন্ত দিতে পারেন না। কিন্তু অসহায় মানুষদের বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যান ডাক্তার রামচন্দ্র। এই করোনা পরিস্থিতিতেও সেই লড়াইতে ছেদ পড়েনি।

ডাক্তার রামচন্দ্রের কথায়, শহরের ডাক্তাররা এইসব হতদরিদ্র মানুষদের দিকে ফিরেও তাকান না। চিকিৎসার প্রথম শর্ত যেখানে মানুষদের জীবনকে অগ্রাধিকার দেওয়া, সেটাই যেন ভুলতে বসেছেন আজকের চিকিৎসকরা। আধুনিক সময়ের উন্নত চিকিৎসার অনেক খুঁটিনাটিই তিনি জানেন না। জানলে হয়তো আরও অনেক মানুষকে বাঁচাতে পারতেন। সামান্য কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ আর সহজলভ্য জড়িবুটি দিয়েই চিকিৎসা চালান তিনি। হয়তো বৈজ্ঞানিক অর্থে সুচিকিৎসা পৌঁছে দিতে পারেন না। কিন্তু এই ৬০ বছর ধরে নিজের কর্তব্যে ফাঁকি দেননি একদিনও। এই একনিষ্ঠতাকে কুর্নিশ জানাতে না পারলে বিজ্ঞানের অগ্রগতি সত্যিই মিথ্যা স্তোকবাক্য হয়ে থেকে যাবে।


ছবি - ট্যুইটার

Powered by Froala Editor