হাসপাতালে স্থানাভাব, মেঝেতে শুয়ে করোনা-আক্রান্তরা - ভয়াবহ দৃশ্য স্পেনে

কোথাও একটু পা রাখার জায়গা নেই। অসুস্থ রোগীরা কেউ বসে আছেন চেয়ারে, কেউ করিডরের মেঝেতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। এর মধ্যেই চলছে চিকিৎসা। ব্যস্ত ডাক্তার, নার্সরাও। কারোর মুখে অক্সিজেন মাস্ক, কারোর হাতে স্যালাইনের চ্যানেল। না, এই ছবি ভারতবর্ষের মতো কোনো উন্নয়নশীল দেশের নয়। খোদ স্পেনের মাদ্রিদ শহরেই ধরা পড়ল এমন বীভৎস দৃশ্য। সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে এমন ঘটনা। আর তার ফলে চাঞ্চল্য তো ছড়িয়েছেই।

আরও পড়ুন
করোনার টেস্ট কিট তৈরি করল ভারত নিজেই, মাত্র ৬ সপ্তাহের প্রচেষ্টায় সাফল্য

করোনার আতঙ্কে যখন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তটস্থ, তখন এমন দৃশ্য স্বাভাবিকভাবেই ভয়ের উদ্রেক করে। আর ইতিমধ্যে ইউরোপে করোনা ভাইরাসের অন্যতম উপকেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে স্পেন। ইতিমধ্যে সেদেশে ২,০০০-এর বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ৪৬২। আর সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা মাদ্রিদ শহরে। মৃতের সংখ্যা সেখানে সারা দেশের ৫৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন
করোনা রুখতে কাজে ফিরলেন কয়েক হাজার অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার ও নার্স

পরিস্থিতি এমন যে, উপযুক্ত পরিষেবা না থাকলেও হসপিটালগুলি বাধ্য হচ্ছে রোগীকে ভর্তি করতে। ইনফ্যান্টা লেনর এবং সেভেরো ওকাও হসপিটালের অবস্থা তো রীতিমতো শোচনীয়। সেখানে রোগীদের বরাদ্দ বেডের সংখ্যার তিনগুণ বেশি রোগীকে ভর্তি নিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কোথাও কোথাও রোগীকে একটি চেয়ারে বসে কাটাতে হচ্ছে ৩০ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময়। কোথাও আবার একটি চেয়ারেই বসে থাকতে হচ্ছে ২ জন রোগীকে। এই দুটি মাত্র হসপিটালেই আক্রান্তের রোগীর সংখ্যা ৫০০-র বেশি। তার মধ্যে ৩০০ রোগীর শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

আরও পড়ুন
করোনা থেকে বাঁচতে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন, কিন্তু সকলের জন্য এক্ষুনি নয়

সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হয়েছিল ঘরে থাকার। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার। কিন্তু স্পেনের মানুষ সে-কথা কানে তোলেননি। আজ তার ভয়াবহ ফল ভোগ করতে হচ্ছে প্রত্যেককেই। স্থানীয় মানুষদের কথায়, হসপিটালগুলির অবস্থা 'নাটকীয়'। ইউরোপের অন্যতম উন্নত একটি দেশেও স্বাস্থ্য-পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে এই মহামারীকে সামলাতে। এর মধ্যে নেই সঠিক কোনো চিকিৎসার হদিশ। পৃথিবীজুড়ে এই মহামারীর মধ্যে আতঙ্কে দিন গুনছেন প্রত্যেকেই। আর স্পেনের এই দৃশ্য সেই আতঙ্ককেই উস্কে দিয়ে যায়।