তিন মাস পরে খুলছে কফি হাউস, আজ থেকেই পাওয়া যাবে আড্ডার স্বাদ

চারকোণা টেবিল, আড্ডার গুঞ্জন, নিকোটিনের গন্ধ আর গরম ইনফিউশন। বাঙালির নস্টালজিয়ার সঙ্গে এমনইভাবেই জুড়ে রয়েছে কফি হাউস। কলেজ স্ট্রিটে পা দিলে যার ডাকে সাড়া না দেওয়া দুষ্কর। সে আট হোক কি আশি। তবে করোনার সংক্রমণে থেমে গিয়েছিল সেই গুঞ্জনের রব। ভেঙে গিয়েছিল আড্ডার মেজাজ। লকডাউনে সকলের মনে আর কফিহাউসের একলা হলুদ দেওয়ালে প্রতিফলিত হচ্ছিল মান্না দে’র সেই অমোঘ গানটা। ‘কফিহাউসের আড্ডাটা আজ আর নেই’। তবে স্থবিরতা কাটিয়ে এবার সকলের জন্যই প্রত্যাবর্তন করছে কফিহাউস।

আজ থেকেই দরজা খুলবে কফি হাউসের। নতুন ছবি যে একেবারেই আলাদা হবে, তা বলাই বাহুল্য। সকাল ১১টা থেকে সন্ধে ৬টা অবধি পাওয়া যাবে পরিষেবা। তবে আগের মতো আর গমগম করবে না কফি হাউস। যেখানে সব মিলিয়ে ৮৫টি টেবিল ছিল, এখন ব্যবহৃত হবে মাত্র ২৫টি। থাকবে ৪টি করে চেয়ারই। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। পাল্টাচ্ছে মেনুও। কেবলমাত্র কফি, ডিম টোস্ট আর ডিম সিদ্ধ পাওয়া যাবে আপাতত। বন্ধ থাকবে অন্যান্য খাবার। প্রথম কয়েকদিন পরিস্থিতি পরখ করে তারপর আসতে আসতে চালু হবে সেগুলিও।

গতকালই কলকাতা পৌরসভা থেকে স্যানিটাইজ করা হয় গোটা কফি হাউস। গেটে আজ থেকে থাকবে থার্মাল স্ক্রিনিং এবং স্যানিটাইজিংয়ের ব্যবস্থাও। টেবিলে জায়গা পাওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরা। কফি হাউস কো-অপারেটিভ লিমিটেডের কর্ণধার জানিয়েছেন, এখন অনুপস্থিত কফিহাউসের সমস্ত কর্মীও। অধিকাংশ কর্মীই বাড়ি চলে গেছেন। কলকাতায় থাকা অল্প কিছু কর্মীদের নিয়েই আনলক পর্বের যাত্রা শুরু করছে বাঙালির আড্ডা-বাড়ি। কলেজ স্ট্রিটের পাশাপাশি, আজ থেকে খুলছে যাদবপুরের কফিহাউসও।

আড্ডা ছাড়া বাঙালির দিনযাপন যে কতটা অসম্ভব, তা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছে লকডাউন। শহর এখন লকডাউনের সীমা পেরিয়ে ফিরতে চাইছে আপন ছন্দে। বন্দিদশাকে পাশ কাটিয়ে স্বাভাবিক করতে চাইছে তার যাপন। এই মুহূর্তে কফিহাউসের প্রত্যাবর্তন বাঙালিকে ফিরিয়ে দিতে চলেছে নস্টালজিয়া মেশানো ব্ল্যাককফি, থুড়ি আড্ডার স্বাদ...

Powered by Froala Editor

More From Author See More