ক্রিসমাসের দিন, বন্দুক নামিয়ে বিশ্বযুদ্ধের ময়দানেই আলিঙ্গন দুই প্রতিপক্ষের

ক্রিসমাসের মরসুম। যীশুর জন্মদিনে আবারও একবার মানুষ ভিড় জমাবেন চার্চে। একটাই প্রার্থনা, সমস্ত জায়গায় শান্তি থাকুক। শান্তি কতটা থাকবে, সেটা পরবর্তী সময় বলবে। কিন্তু এই ক্রিসমাসের জন্যই একবার থেমে গিয়েছিল যুদ্ধের দামামা। অল্প সময়ের জন্য হলেও, শত্রু আর বন্ধু সব একাকার হয়ে তৈরি হয়েছিল একটিই পরিচয়ে; মানুষ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। যার ভয়াবহতার কথা আমরা সবাই জানি। সালটা ১৯১৪। ততদিনে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। একদিকে রাশিয়া, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড। অপরদিকে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ইতালি। এমন সময় চলে এল ক্রিসমাস ইভ। বলা ভাল, বিশ্বযুদ্ধের প্রথম ক্রিসমাস। ব্রিটিশ বাহিনী ট্রেঞ্চে বসে। লক্ষ্য সামনে থাকা জার্মান সেনাবাহিনী। কিন্তু, পরিস্থিতি যেন অন্যরকম লাগছে। খানিকক্ষণ থাকার পর তাঁরা দেখলেন অন্য দৃশ্য।

জার্মান সেনারা বন্দুক নামিয়ে খেলছেন পরস্পরের সঙ্গে। কিছুক্ষণ পর ব্রিটিশদের দিকেও হাত বাড়িয়ে দিলেন তাঁরা। ভুলে গেলেন শত্রুতার সম্পর্ক। দুই প্রতিপক্ষ মেতে উঠলেন আনন্দে। ভুলেই গেলেন, এই কিছুক্ষণ আগে অবধিও তাঁরা একে অপরকে মারার জন্য তৈরি হয়েছিলেন। আর এখন? নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিচ্ছেন খাবার, গিফট। এমনকি ফুটবলও খেলছেন। বাদ নেই আলিঙ্গনও।

১৯১৪-এর ক্রিসমাস যুদ্ধের আবহেও দেখিয়েছিল সম্প্রীতির ছবি। সেই সম্প্রীতি বেশিক্ষণ টেকেনি ঠিকই। কিন্তু মানুষ চাইলে হিংসা, যুদ্ধ, হানাহানি এই সবকিছু ভুলে আনন্দে মেতে উঠতে পারে। সেই চেষ্টাই কি করতে পারি না আমরা?