বিপন্ন ডলফিনের অস্তিত্ব রক্ষায় অভিনব যন্ত্র আবিষ্কার বাঙালি বিজ্ঞানীর

পশ্চিমবঙ্গের মুকুটে যোগ হল আবার সাফল্যের এক নতুন পালক। মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শুভময় দাস আবিষ্কার করেছেন এক অভিনব যন্ত্র। এই যন্ত্র দিয়ে অনেক দূর থেকে ডলফিনের গতিবিধি পরখ করা যাবে। এড়ানো যাবে নিত্য বেড়ে চলা ডলফিনের মৃত্যু। যন্ত্রটির নাম ‘ডলফিন ডিটেকশন ডিভাইস’।

বেশ কিছুদিন ধরে অতি মাত্রায় ডলফিন বা গাঙ্গেয় শুশুকের মৃত্যু চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিভিন্ন প্রাণী বিজ্ঞানীদের কপালে। সাধারণত এই স্বচ্ছ জলের এই প্রাণীটি কমে যাওয়ার পিছনে আছে উত্তরোত্তর বেড়ে চলা গঙ্গার দূষণ। সঙ্গে যোগ হয়েছে ডলফিনের গতিপথের সঙ্গে জাহাজের গতিপথ মিলে যাওয়াও। পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক বছরে মুণ্ডেশ্বরী, দামোদর, রূপনারায়ণের মতো নদীতে প্রায় ৮০টির বেশি ডলফিন মারা গেছে। এই পরিসংখ্যান সাড়া ফেলেছে বিভিন্ন মহলে। শুভময় দাসের নেতৃত্বে কয়েকজনের গবেষক দল এর কারণ উদ্ধারে নামেন। বিভিন্নভাবে ডলফিনের ওপর পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা। শেষমেশ কিছুদিন আগেই এই গবেষণার ফল হিসেবে আবিষ্কৃত হয় একটি ছোট্ট সেন্সরযুক্ত যন্ত্র। দামও আয়ত্তের মধ্যেই, মাত্র ৫ হাজার টাকা। ২০০ মিটার দূর থেকেও ডিভাইসটি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে ডলফিনের গতিবিধি। জাহাজে এই যন্ত্র থাকলে ডলফিনের গতিপথ এড়াতে বিশেষ ভূমিকা নেবে এই ডিভাইস।

মানুষের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে যাওয়া এই প্রাণীটিকে বাঁচাতে নানা রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজ্য ও জাতীয় পর্যায়ে। তারই মধ্যে শুভময়বাবুর এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য। আবিষ্কারের পর তাঁর কলেজে রীতিমতো আইকনে পরিণত হয়েছেন তিনি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকার আয়োজিত এক বিজ্ঞান মডেল প্রতিযোগিতায় ডলফিন ডিটেকশন ডিভাইসটি পুরষ্কৃতও হয়। কলেজের এমন সাফল্যে শুভময়বাবুর ছাত্ররাও বেজায় খুশি।


সব মিলিয়ে বাংলার এই আবিষ্কার ডলফিনকে টিকিয়ে রাখতে কতটা কার্যকর হয় সেটাই দেখার।