বাঘরোল সংরক্ষণে দিশা দেখিয়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার বঙ্গতনয়ার

দ্রুত নগরায়ন ক্রমশ বিপর্যস্ত করে তুলছে জলাভূমির বাস্তুতন্ত্রকে। কলকাতা সংলগ্ন এলাকা তো বটেই, এমনকি প্রান্তিক জেলাগুলিতেও ক্রমাগত দূষণ এবং মানুষের কার্যকলাপের শিকার হচ্ছে জলাভূমির আদি বাসিন্দা বাঘরোল (Fishing Cat)। বিপন্নপ্রায় প্রাণীটি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পশুও বটে। তবে রাজ্যের একাধিক অঞ্চলে চিতাবাঘ সন্দেহে বাঘরোল হত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে প্রতিবছরই। বিপন্নপ্রায় এই প্রাণীটির সংরক্ষণে দিশা দেখিয়ে এবার আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন এক বঙ্গতনয়া। 

তিয়াসা আঢ্য (Tiasa Adhya)। কলকাতার এই তরুণীই বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন বাঘরোল সংরক্ষণের ওপর। তবে শুধু বাঘরোলের অস্তিত্ব রক্ষাই নয়, তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘দ্য ফিশিং ক্যাট প্রোজেক্ট’ নতুন করে প্রাণসঞ্চার করছে সমগ্র জলাভূমির বাস্তুতন্ত্রেও। স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করা থেকে শুরু করে সরকার ও গবেষকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করাই তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমানে ওড়িশার চিলকা অঞ্চলে বাঘরোল সংরক্ষণের উপর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিয়াসা।

সম্প্রতি, এই বিশেষ প্রকল্পটির জন্যই সম্মানজনক ‘ফিউচার অফ নেচার অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিয়াসা। প্রতিবছর তিনজন প্রকৃতি সংরক্ষণবিদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেয় ফিউচার অফ নেচার ফাউন্ডেশন। চলতি বছরে প্রায় আড়াইশো মনোনয়নের মধ্যে থেকে তিন বিজয়ীকে বেছে স্নেয় নেচার ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। তিয়াসা ছাড়াও ব্রাজিলের গ্র্যাব্রিয়েল মাসাকাতো এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী রেবেকা ক্লিফ ভূষিত হয়েছেন এই পুরস্কার। 

১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী আইনের আওতায় প্রথম সারির বিপন্নপ্রায় প্রাণীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মেছো বিড়াল বা বাঘরোলকে। বাঘরোল হত্যায় জেল-জরিমানারও আইন রয়েছে খাতায় কলমে। তবে আদৌ কি কোনো পরিবর্তন এসেছে তাতে? প্রতিনিয়তই কোথাও না কোথাও চলছে বাঘরোল হত্যা। সেখানে দাঁড়িয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এই পরিস্থিতিতে বদলে আনছেন তিয়াসা। সংশ্লিষ্ট পুরস্কারটি তাঁর এই লড়াইয়েরই স্বীকৃতি। আগামী ১৩ মে নেদারল্যান্ডসের আর্নহেম শহরে আয়োজিত একটি কনফারেন্সে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে নেচার অ্যাওয়ার্ড…

Powered by Froala Editor