পুজোর আগেই প্রবাসে পাড়ি দেন বর্ধমানের প্রতিমাশিল্পীরা

পূর্ব বর্ধমানের একটি জনপদ পূর্বস্থলী। আর সেখানকারই ১ নং ব্লকের জাহান্নগরে বসবাস মৃৎশিল্পীদের। পুজোর আগের এই মরসুম তাঁদের যে ব্যস্ততায় কাটে, তা কল্পনা করা স্বাভাবিক। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে, পুজোর প্রায় ২ মাস আগেই তাঁরা শেষ করে ফেলেন প্রতিমা তৈরির কাজ।  কেন, এ-প্রশ্নের উত্তরে লুকিয়ে আছে অন্য গল্প।

সারা বছর এই দুর্গাপুজোর মরসুমের অপেক্ষায় থাকেন জাহান্নগরের মৃৎশিল্পীরা। বড় রকমের উপার্জনের জন্য দুর্গাপ্রতিমা তৈরি ছাড়া গতি নেই তাঁদের। কিন্তু স্থানীয় এলাকায় প্রতিমা বিক্রি করে যা আয় হয়, তা যথেষ্ট নয়। ফলে কাজের জন্য প্রবাসে পাড়ি দিতেই হয় তাঁদের।

পুজোর দু’মাস আগে জাহান্নগরে প্রতিমা তৈরি প্রায় সেরে ফেলেন তাঁরা। তারপর যান উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে। সেখানে জায়গা ভাড়া নিয়ে, মূর্তির কাজে লাগেন। মাসাধিককাল ধরে কাজ চলে। ফলাফল নেহাত ফেলনা হয়। জাহান্নগরে একটি প্রতিমা বিক্রি করে যা আয় হয়, প্রবাসে তার প্রায় দ্বিগুণ আয় করেন শিল্পীরা। ফলে সমস্ত খরচ সরিয়েও বেশ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েই ঘরে ফেরেন তাঁরা।

পুজোর দিন সাতেক বাকি থাকতে তাঁদের ফেরা। দু-মাস আগে যে প্রতিমা বানিয়ে গিয়েছিলেন, তাতে রং ও চক্ষুদান সম্পূর্ণ হয় তখনই। এরপর বিক্রি। এভাবেই ঘর ও বাহির সামলাচ্ছেন জাহান্নগরের শিল্পীরা, গত কয়েকবছর ধরে। প্রবাসে দুর্গাপুজোর চল বাড়ায় আখেরে লাভই হয়েছে তাঁদের। উপার্জনের চিন্তা কমেছে কিছুটা। পুজোর সময় স্বচ্ছলতার মুখ দেখছে পরিবার।

দশভূজার উৎসবে, আর কীই বা চাওয়ার থাকতে পারে কারিগরদের?